রাজশাহী জেলার সমগ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে রাজশাহী ভেরিপাড়ায় পিটিআই স্কুলের সামনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় রাজশাহী ভেরিপাড়ায় পিটিআই স্কুলের সামনে প্রায় ১২০০ শিক্ষক-শিক্ষিকা মানববন্ধনে অংশ নেন।
সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম আরিফের সঞ্চালনায় মানববন্ধনটি পরিচালিত হয়।
অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এস ইসরাত হামিদ, মো সোহেল রানা, মো হারুন উর রশিদ প্রমুখসহ রাজশাহী জেলা ও প্রতিটি উপজেলার ১২০০ শিক্ষক-শিক্ষিকা।
সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, "সুশিক্ষিত জাতি গঠনে প্রাথমিক শিক্ষা ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। প্রাথমিকের শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগার। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষকদের ভূমিকা সর্বাধিক। তথাপি, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।"
তিনি আরো বলেন, "স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতায় পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ডিপ্লোমাধারী নার্স, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়া হচ্ছে। সেখানে একই যোগ্যতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন দেওয়া হচ্ছে।"
সহকারী শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম আরিফ বলেন, "শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করতে হলে অবশ্যই প্রাথমিক শিক্ষকদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে। ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি আমাদের অধিকার। যদি এ যৌক্তিক দাবি পূরণ না হয়, তবে আমরা পরবর্তীতে বৃহত্তর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেব।"
গোদাগাড়ীর শিক্ষিকা ববি মন্ডল বলেন, "সহকারী শিক্ষকদের ১৩ তম গ্রেডে একজন শিক্ষকের প্রারম্ভিক বেতন ১১,২০০ টাকা, যা অপ্রতুল। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে শিক্ষকরা কিভাবে তাদের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করবে? শিক্ষকদের জীবন মানের উন্নয়ন দরকার, তবেই জাতি গঠনে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে।"
তিনি উল্লেখ করেন, "২০২০ সালে সাবেক স্বৈরশাসক হাসিনা সরকার তাদের নানা রকম দাবি প্রেক্ষিতে ১৬তম গ্রেড থেকে ১৩ তম গ্রেডে উন্নীত করে। একজন দিনমজুর দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে মাসিক ১৫,০০০ টাকা রোজগার করে, যেখানে একজন সরকারি শিক্ষক পান মাসে ১১,২০০ টাকা। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বৈষম্য দূরীকরণ প্রয়োজন।"
পরে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয় ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়।
মতামত