সারাদেশ

প্রতিবন্ধী রনি মুরমুর মানবেতর জীবনযাপন

প্রতিবন্ধী রনি মুরমুর মানবেতর জীবনযাপন

ছবি : মুন টাইমস নিউজ


প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, দুপুর ১২:২১

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আদিবাসী পল্লি লক্ষ্মীপুর দিঘীপাড়া গ্রামের ৯ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী এতিম শিশু রনি মুরমু জন্মগতভাবে পঙ্গু। শৈশব থেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছে সে। রনির বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই, আর নেই কোনো প্রতিবন্ধী কার্ডও, যা তাকে সরকারের সেবার আওতায় আনতে পারত। রনির নানি সনতি মুরমু (৬২) বলেন, "আমার মেয়ে মেনতা হেমরম যখন ৭ মাসের গর্ভবতী ছিল, তখন সংসারে চরম অভাব ছিল। সেই সময় রাগ করে আমার মেয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। সন্তান জন্মের দুই বছর পর ফিরে এলে জানতে পারে, তার স্বামী কার্ত্তিক মুরমু মারা গেছে। শ্বশুরবাড়ি থেকেও তারা ঠাঁই পায়নি। ফলে মা-মেয়ে এসে আমার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে আমার মেয়ে কোনো খোঁজ না দিয়ে ভারতে চলে যায়, আর ফিরে আসেনি।" রনি এখন তার নানির সাথেই থাকে, তবে অর্থাভাবে নানি সনতি মুরমু প্রায়ই তাকে নিয়ে ভিক্ষায় বের হন। সনতি বলেন, "বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ড না থাকায় রনির প্রতিবন্ধী কার্ডও করতে পারিনি। তাকে নিয়ে চলা আমার জন্য খুবই কষ্টকর।" রনির একমাত্র সঙ্গী তার ১০ বছরের পিসির ছেলে বর্ষণ, যিনি কাঠের ফ্রেম আর বিয়ারিং দিয়ে একটি ছোট গাড়ি তৈরি করেছেন। এতে করে রনিকে ঠেলে বাজার বা আশেপাশের এলাকায় নিয়ে যায় বর্ষণ। তবে এই গাড়ি ঠেলে প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ চলা বর্ষণের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বর্ষণ জানায়, "রনির জন্য একটি হুইল চেয়ার হলে ওকে নিয়ে চলাফেরা করতে আমার অনেক সুবিধা হবে।" রনি নিজেও ভাঙা ভাঙা গলায় জানায়, "আমি হাঁটতে পারি না, তাই স্কুলে যেতে পারি না। কিন্তু আমি পড়ালেখা করতে চাই। যদি একটা হুইল চেয়ার পেতাম, তাহলে স্কুলে যেতে পারতাম।" এই এতিম প্রতিবন্ধী শিশুটি সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে একটি হুইল চেয়ার এবং প্রতিবন্ধী কার্ডের আবেদন জানিয়েছে, যা পেলে তার শিক্ষার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।