ফরিদপুরের সালথা উপজেলার চরবল্লভদী গ্রামের মো. রিয়াজ মুন্সী (২০) উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখলেও শেষমেশ সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।
কৃষিকাজ ও ব্যবসায় সাফল্য না পেয়ে অবৈধ পথে দালালের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার চুক্তি করেছিলেন তিনি। ১৫ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে দালালদের হাতে পড়েন রিয়াজ।
তবে ইতালির পরিবর্তে তাকে সাগরপথে নিয়ে যাওয়া হয় লিবিয়ায়, যেখানে টানা কয়েক মাস আটকে রেখে আরও ১৫ লাখ টাকা দাবি করে চালানো হয় নির্মম নির্যাতন।
পরিবারের পক্ষে অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় দালালরা রিয়াজের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়। শেষমেশ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে রিয়াজ মৃত্যুবরণ করেন।
তার লাশ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দেশে এসে পৌঁছায় গতকাল রবিবার বিকেলে। সোমবার সকালে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত রিয়াজের বাবা মো. ইউনুস মুন্সী জানান, রিয়াজ অভাবের সংসারে হাল ধরার জন্য কৃষিকাজ ও ব্যবসায় যুক্ত হলেও তাতে সফলতা না পেয়ে ইতালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
পাশের মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের দালাল শাকিল খার সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালি যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
রমজানের প্রথম সপ্তাহে দালাল শাকিল ও তার সহযোগী লিবিয়ায় অবস্থানরত আরেক দালালের মাধ্যমে রিয়াজকে লিবিয়ায় নিয়ে যায়।
সেখানে রিয়াজকে আটকে রেখে পরিবার থেকে আরও ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরিবারের পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় দালালরা তার ওপর অত্যাচার চালিয়ে শেষমেশ তাকে হত্যা করে।
রিয়াজের লাশ দেশে পৌঁছানোর পর পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে বাড়ির পরিবেশ।
মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল আলম জানান, রিয়াজের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় কিছুদিন আগে থানায় একটি মানবপাচার মামলা হয়েছিল, যা এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করা হবে। হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
মতামত