ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুন্দী ইউনিয়নে অবস্থিত নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ বাদী হয়ে সালথা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান।এলাকার দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্ধনে কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ও বহিরাগত এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কলেজের পাশের বাসিন্দা যদুনন্দী এলাকার কাইয়ুম মোল্যাকে। এছাড়া স্থানীয় কামরুল গাজী, লালন, মনির ও মিয়াসহ ৯ জনকে আসামি হয়েছেন। তবে এ মামলায় কলেজের কোনো শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়নি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান ও তার ছেলে কলেজে প্রবেশ করার সময় তাদের জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি বাগানের ভেতর নিয়ে যায় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী ও কয়েকজন ছাত্র। এ সময় তাদের বাবা-ছেলেকে হাতুড়ি গিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে অধ্যক্ষের কাছ থেকে জোর করে পদত্যাপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে সন্ত্রাসী কায়দায় অধ্যক্ষকে মারধর ও তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় মামলার পর শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ওবায়দুর রহমান বলেন, “আমাকে হাতুড়িপেটা করে আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে সই নেন কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। এতে নেতৃত্ব দেন কাইয়ুম মোল্যা, কামরুল গাজী ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী। আমি ইচ্ছা করে পদত্যাগপত্রে সই করিনি। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিতে তাদের নামে মামলা করেছি।”
ছাত্রদের মামলায় আসামি না করার বিষয়ে তিনি বলেন, “ছাত্রদের দোষ নেই এখানে। ছাত্রদের ব্যবহার করেছে ওই নেতারা। তাই ছাত্রদের আমি হয়রানি করতে চাই না।”
অভিযুক্ত কাইয়ুম মোল্লা সংবাদমাধ্যমকে জানান, এ এলাকা দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রউফ। আরেক অংশের নেতৃত্ব দেন তিনি নিজে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ওই অধ্যক্ষ তার (কাইয়ুম) সমর্থিত ছাত্রদের নাম পুলিশে দিয়ে তাদের হয়রানি করেছেন। এসবের জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, “ঘটনার পর আমি কলেজে গিয়েছিলাম। সব বিষয় খোঁজখবর নিয়েছি। অধ্যক্ষের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।”
মতামত