দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বড় জালালপুর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী রুবেল হোসেনের বিয়েতে গ্রামবাসীর অসাধারণ সহযোগিতা দেখা গেছে। গেলো মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জালালপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
২০ বছর আগে একটি দুর্ঘটনায় দুই হাত হারানো রুবেলের জন্য বিয়ের আয়োজন করাটা সহজ ছিল না। কিন্তু গ্রামবাসী এক হয়ে তার জন্য সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে। কেউ দিয়েছেন টাকা, কেউ ব্যবস্থা করেছেন খাবারের। সব মিলিয়ে বর্ণিল মঞ্চ সাজিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ উদযাপন হয়েছে।
রুবেলের বাবা আফজাল হোসেনের মৃত্যুর পর থেকে রুবেলের মা আরজিনা বেগম একা ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। ছেলের বিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখলেও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তিনি চিন্তিত ছিলেন। এই পরিস্থিতি দেখে গ্রামবাসী এগিয়ে এসে রুবেলের জন্য উপজেলার চৌঘুরিয়া গ্রামের আকবার আলীর মেয়ে মুক্তার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছে। সবার আর্থিক সহযোগিতায় বিয়ের অনুষ্ঠানে মোহরানা হিসেবে এক লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
রুবেলের মা আরজিনা বেগম বলেন, 'ছেলের বিয়ের বয়স হয়েছে। আমি বৃদ্ধ হয়েছি। মারা গেলে কে তাকে দেখবে এমন চিন্তা তাড়া করে বেড়াতো। এদিকে তাকে বিয়ে দেবার মতো কোনো সম্বল নেই। এ সময় গ্রামের লোক পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা বিয়ের যাবতীয় খরচ বহন করেছে"।
কনের বাবা আকবর আলী বলেন, 'বিয়ের আগে রুবেলের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তাকে দেখে মায়া হয়েছে। নিজের সন্তানের এমন হলে কী করতাম এমন ভাবনা থেকেই তার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হয়েছি। মেয়েও অমত করেনি"।
গ্রামবাসীর এই সহযোগিতা স্থানীয়দের মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে। তারা মনে করেন, এই ঘটনা মানবতার জয়গাথা।
মতামত