ভ্যানচালক বাবার একার উপার্জনে চলছিল না সংসার। তাই পড়ালেখা বাদ দিয়ে অভাবে সংসারের হাল ধরতে মাত্র ১১ বছর বয়সে অটোভ্যান চালাতে শুরু করে মো. নাফিস মাতুব্বর নামে এক কিশোর। তার স্বপ্ন ছিল ভ্যান চালিয়ে মা-বাবার মুখে ফুটাবে হাঁসি, বিয়ে দেবে দুই বোনকে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই সংসারের হাল ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হলো তাকে।
প্রতিদিনের মতো ভাড়া টানতে শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে অটোভ্যান নিয়ে বের হয় নাফিস। এ সময় ভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে।
নিহত নাফিস ফরিদপুরের সালথা উপজেলার লক্ষনদিয়া গ্রামের ভ্যানচালক মো. তারা মাতুব্বরের একমাত্র ছেলে। নাফিসের প্রতিবেশী গট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান লাবলু এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় বিনোকদিয়া বাজার থেকে অটোভ্যানে করে যাত্রী নিয়ে লক্ষনদিয়া মাদরাসার দিকে যাচ্ছিল নাফিস। পথে লক্ষনদিয়া মঙ্গল শেখের বাড়ির সামনে ভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি মান্দার গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে নাফিসের মাথা ফেটে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, কিশোর নাসিফের বাবাও একজন ভ্যানচালক।
তার একার আয়ে চলছিল না সংসার। এরপর নাফিসের দুটি বোন রয়েছে। তাদেরও বিয়ে দিতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে নাফিস ভ্যান চালাতো। এমন অবস্থায় একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছে মা-বাবা।
স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে বাড়ির পরিবেশ।
সালথা থানার এএসআই সেলিম বলেন, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে নাফিসের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
মতামত