জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার নবাবগঞ্জঘাট মহাশ্মশান, মন্দির ও সংলগ্ন দেবস্থান অবকাঠামো তুলসীগঙ্গা নদীর ভাঙনে যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এমন সংবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর জয়পুরহাট-০২ (কালাই, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর) আসনের সংসদ সদস্য হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি ও উপজেলা প্রশাসন সহ পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়ে চড়ে বসে। মহাশ্মশান পরিদর্শন ও ভাঙন রোধের জন্য দ্রুত জিও ব্যাগ ও পাইলিং দেওয়ার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করে জয়পুরহাট জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মহাশ্মশানের নদীর পাড়ে আরসিসি পাইলিং, রিটার্নিং ওয়াল ও ব্লক না থাকায় প্রতিবছর মন্দির ও শ্মশান প্রাঙ্গণ বন্যায় ও অতি বৃষ্টিতে ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জয়পুরহাট জেলার অধিনে তুলসীগঙ্গা নদী খননের কর্মযজ্ঞ চালায়, শ্মশানের পাড় ঘেসে সেইসময়ে নদী শাসন করার নামে খননের ফলে আরো বেশি ভাঙনের মুখে পড়েছে মহাশ্মশান। এতে করে নদীর পানি একটু বারতি হতে না হতেই ভেঙে পড়ছে মহাশ্মশানের নদীর পাড়। আক্কেলপুর উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার সনাতন সম্প্রদায়ের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
নবাবগঞ্জ ঘাট মহাশ্মশান, দেবস্থান ও সমাজ কল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক সুশীল কুমার আগরওয়ালা বলেন, ১৮১৬ সালে আক্কেলপুর উপজেলার শ্রী সুরতলাল চৌধুরী, শ্রী মহাদেব আগরওয়ালা, শ্রী ভীমরাজ আগরওয়ালা ও স্থানীয় মারোয়ারী সমিতির উদ্যোগে তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে নবাবগঞ্জ ঘাটে সনাতন সম্প্রদায়ের মৃত ব্যক্তিদের দাহ, সমাধি ও সৎকাজের জন্য নিজেদের অর্থে ১১ বিঘা জমি শ্মশানের নামে দান করেন। এখানে সমাধির স্থান, পাকা চুল্লি ও বিশ্রামাগার বহু পুরানো ঐতিহ্য বাহী বট গাছ ও পাইকর গাছ রয়েছে। এই মহাশ্মশান সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে যথাক্রমে নিবন্ধন ও তালিকাভুক্ত সনদপত্রও রয়েছে।
ওই শ্মশান ও মন্দির বন্যা ও নদীন শাসনের কারণে তুলসীগঙ্গা নদীতে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। । হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েও আজও সুফল পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের মাঝে শ্মশানের এই সংকট ও দুর্ভোগ নিরসনে শঙ্কা বেড়েই চলেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে শ্মশান ও মন্দির রক্ষায় লিখিতভাবে বারবার আবেদন করা হয়েছে। জয়পুরহাট-০২ আসনের মহান জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে শ্মশান রক্ষার জন্য নদীর পাড়ে আরসিসি, পাইলিং, রিটার্নিং ওয়াল ও ব্লকের কাজ অতি সত্বর টেন্ডারের মাধ্যমে শুরু করার জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন।
জয়পুরহাট জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মহাশ্মশান পরিদর্শনে এসে বলেন, চলছে বর্ষাকাল, “নদী ভাঙন: বিলীন হচ্ছে আক্কেলপুরের মহাশ্মশান” এমন সংবাদ পাওয়ায় নিজে পরিদর্শনে এসেছি। শ্মশানে ভাঙন রোধের জন্য দ্রুত ঠিকাদারকে নিয়োগ করে জিও ব্যাগ ও বাঁশের পাইলিং দেওয়ার জন্য ব্যবস্থাও করেছি। অতি দ্রুত মহাশ্মশান রক্ষার জন্য নকশা ও প্রাক্কলন তৈরি করে ঢাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাঠানো হবে।
মতামত