দারিদ্র্য দূরীকরণে ড. ইউনূস অনুপ্রেরণা, বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী ইমরান খান

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন বিনিয়োগকারী ও স্ন্যাপচ্যাটের সাবেক প্রধান কৌশলগত কর্মকর্তা (সিএসও) ইমরান খান বলেছেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আজীবন মিশন তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে এবং এখনই মাতৃভূমিতে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়।

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শনিবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকালে তিনি বাংলাদেশে বিশেষ করে ফিনটেক খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে ফিনটেক, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক ব্যবসা খাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এসব খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। জবাবে ইমরান খান বলেন, আমি আপনার কাজের একজন বড় ভক্ত। আপনি আমাদের জাতীয় গর্ব।

তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তার ভাষায়, সময়টি অনুকূল। নিয়ন্ত্রক পরিবেশ এখন আরও সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশ একটি ফ্রন্টিয়ার মার্কেট। এখানে ফিনটেক খাতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বিপুল। তরুণ জনগোষ্ঠী বিশাল এবং সুযোগ সীমাহীন।

অধ্যাপক ইউনূস ইমরান খানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যেন তিনি নিজ চোখে বিনিয়োগ সম্ভাবনা দেখতে পারেন। জবাবে ইমরান খান আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা জানান।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের জন্য আপনার মতো রোল মডেল প্রয়োজন। দেশে এখন উদ্দীপনামূলক সময় চলছে—আপনি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা প্রস্তাব দেন, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিনিয়োগকারীরা তাদের মোট বিনিয়োগের অন্তত এক শতাংশ সামাজিক ব্যবসায় ব্যয় করতে পারেন অথবা একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠন করতে পারেন। ইমরান খান এ প্রস্তাবে সম্মতি জানান এবং ভবিষ্যতে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

ইমরান খানের পরিচিতি

বর্তমানে ৪৮ বছর বয়সী ইমরান খান ১৮ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। তিনি জেপি মরগান ও ক্রেডিট সুইসে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। আলিবাবার ইতিহাস গড়া আইপিও পরিচালনার মাধ্যমে তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান। পরবর্তীতে স্ন্যাপচ্যাটের সিএসও হিসেবে কয়েক মাসের মধ্যেই কোম্পানির মূল্য শূন্য থেকে ৭২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করেন।

২০১৮ সালে তিনি প্রাইম অ্যাসেট নামে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যা মূলত প্রযুক্তি ও ফিনটেক খাতে বিশেষায়িত বিনিয়োগ করে। বর্তমানে তিনি আলেফ হোল্ডিং-এর বোর্ড চেয়ারম্যান।