শিক্ষাঙ্গন

শিক্ষক-শ্রেণিকক্ষ সংকট মেটাতে না পারায় ইবি উপাচার্যের প্রতি অনাস্থা

শিক্ষক-শ্রেণিকক্ষ সংকট মেটাতে না পারায় ইবি উপাচার্যের প্রতি অনাস্থা

প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দুপুর ১:১৬

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বর্ষপূর্তিতে তার কর্মকাণ্ড নিয়ে শিক্ষার্থীরা জরিপ চালিয়েছে। এতে উঠে এসেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চরম অনাস্থার চিত্র। শিক্ষক স্বল্পতা ও শ্রেণিকক্ষ সংকট মেটাতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় এই অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন জরিপ আয়োজকরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ ও শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসন জরুরি। কিন্তু এক বছরের দায়িত্ব পালনকালে উপাচার্য আশ্বাস দিলেও বাস্তব পদক্ষেপ নেননি। ফলে ক্যাম্পাস সংস্কারে তার অবদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তীব্র সমালোচনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৪টি বিভাগ বর্তমানে তীব্র শিক্ষক সংকটে জর্জরিত। এর মধ্যে রয়েছে চারুকলা, সমাজকল্যাণ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ফোকলোর স্টাডিজ, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম, মার্কেটিং এবং জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগ। ধার করা শিক্ষক নিয়ে শ্রেণিকার্যক্রম চালানোয় শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

শ্রেণিকক্ষ সংকটও সমস্যা বাড়িয়েছে। এ কারণে একাধিকবার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও আন্দোলন করলেও প্রশাসন পুরোপুরি সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। শ্রেণিকক্ষ দখল নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থানও দেখা গেছে।

এদিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা আটকে যায় ইউজিসির অনুমোদন সংকটে। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ২১ বিভাগে ৫৯টি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও ইউজিসির অর্থ ছাড় না পাওয়ায় প্রক্রিয়া স্থগিত হয়। পরে ছয়টি বিভাগে মাত্র ছয়টি পদ অনুমোদন দেয় ইউজিসি।

ইবি সংস্কার আন্দোলনের সদস্য খন্দকার আবু সাঈম বলেন, প্রাথমিক প্রয়োজন মেটাতে না পারায় উপাচার্যের প্রতি আস্থা হারিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তবে তিনি মনোযোগী হলে আস্থা ফেরানো সম্ভব।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রোকসানা মিলি বলেন, শিক্ষক নিয়োগ ও শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসন ছাড়া এই অনাস্থা দূর হবে না।

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক জানান, সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। কয়েক মাসের মধ্যে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, চলমান একাডেমিক ভবনের কাজ শেষ হলে শ্রেণিকক্ষ সংকট কেটে যাবে। শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা চলছে। অচিরেই সেশনজটমুক্ত করতে পারব বলে আশাবাদী।