ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফরদাবাদ গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির দুটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। আজ সকালে রূপসদী ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুসা হায়দার সালিশ ডাকেন। সালিশে অংশ নিতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শিপন তার সমর্থকদের নিয়ে ফরদাবাদ শান্তির বাজারে গেলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ফরদাবাদ ইউনিয়নের সাবেক যুবদল সভাপতি সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ।
এই ঘটনায় শিপন গ্রুপের ১৩ জন এবং সালাউদ্দিন গ্রুপের ৩ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ইমন (২৩), শাহপরান (২৪), শিশু মিয়া (৬০), সোহেল (৩৩), ফারুক (২৫), সাদ্দাম (৩৩), রোহেল (২৫), সালাউদ্দিন (৪৭), মামুন (২৩), সালমা (২৪), আখি আক্তারসহ আরও ১০-১২ জনের নাম পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালায়। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পুরো ফরদাবাদ এলাকায়।
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, “ফরদাবাদ ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি এবং এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে হামলায় আহতদের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, সালাউদ্দিন ও তার অনুসারীরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নাম ব্যবহার করে এলাকাজুড়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং দখলবাজিতে লিপ্ত। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে গেলেই হামলা ও হুমকির শিকার হন।
তবে অভিযুক্ত সালাউদ্দিনের পক্ষ থেকে কেউ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম. এম. ইলিয়াস বলেন, “আধিপত্য কিংবা ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আহত সবাই বিএনপির কর্মী। আমি পুরো ঘটনা বিস্তারিত জেনে পরে মন্তব্য করবো।”
ফরদাবাদ এলাকায় বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
মতামত