সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় নিখোঁজের ৬ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া রাজমিস্ত্রি রাশেদুল ইসলাম রাসু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (৭ জুন) দুপুরে ও রাতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের ভয়নগর গ্রামের কাবের হোসেনের ছেলে এক সন্তানের জনক সুমন সরকার (৩৩) ও একই এলাকার আলাউদ্দিনের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী আন্না খাতুন (৩০)। হত্যাকাণ্ডের শিকার দুই সন্তানের জনক রাজমিস্ত্রি রাশেদুল ইসলাম রাসু (৩৫) একই এলাকার আবু সাঈদের ছেলে।
জানা যায়, গত ৩০ মে রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রাজমিস্ত্রি রাশেদুল ইসলাম রাসু। এর ৬ দিন পর বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
উল্লাপাড়া থানার ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, ‘রাশেদুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধারের পর তার বাবা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার ফারুক হোসেনের দিক নির্দেশনায় উল্লাপাড়া থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম মামলার তদন্ত শুরু করে।
গতকাল শনিবার ঈদের দিন দুপুরে নিজবাড়ি থেকে আন্না খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে- সুমনের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক জেনে যাওয়ার কারণে রাশেদুলকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তার দেওয়া তথ্যমতে শনিবার রাত দেড়টার দিকে সুমনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘গ্রেপ্তার আন্না ও সুমন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন রাশেদুল ইসলাম তাদের পরকীয়া সম্পর্ক জেনে গিয়েছিলেন এবং অনৈতিক কাজের সময় দেখে ফেলেছিলেন।
যে কারণে তার সঙ্গেও অনৈতিক কাজ করার জন্য রাশেদুল ইসলাম গৃহবধূ আন্নাকে চাপ দিচ্ছিলেন। যে কারণে আন্না ও সুমন মিলে রাশেদুলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। এ অবস্থায় ৩১ মে রাতে রাশেদুলকে নিজেদের গোয়ালঘরে ডেকে নিয়ে যান আন্না। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন সুমন। ঘোয়ালঘরে পৌঁছার পর আন্নার ওড়না দিয়ে রাশেদুলের গলা চেপে ধরেন সুমন এবং আন্নাও গলা চেপে ধরেন।
রাশেদুল মারা যাওয়ার পর তাদের বাড়ির পাশের একটি সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় উল্লেখ করে ওসি আরো বলেন, ‘সেখান থেকেই ৬দিন পর রাশেদুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ রবিবার বিকেলে গ্রেপ্তারদের আদালতে হাজির করা হবে।’
মতামত