সারাদেশ

শেষসময় এ পশু কোরবানির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত ভূঞাপুরে কামাররা

শেষসময় এ  পশু কোরবানির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত ভূঞাপুরে  কামাররা

প্রকাশিত : ৫ জুন ২০২৫, সন্ধ্যা ৬:৩৭

কাল বাদে পরশু দিন শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। আসন্ন কোরবানি ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কামাররা। এসব সরঞ্জাম নতুনভাবে তৈরি এবং পুরোনোগুলোতে শান দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। 

বছরের অন্য সময়ের তুলনায় তাদের কাজ বেড়েছে। ঈদের দিন পর্যন্ত চলবে এ কর্মব্যস্ততা। বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে কয়লা, লোহাসহ সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো লাভ তেমন হয়না বলে জানান এই ব্যবসায়ীরা। 
একসময় জমজমাট ছিল কামারপাড়া। ঘুম থেকে উঠলেই শোনা যেত কামারশালার টুং-টাং শব্দ, যা এখন শুধুই স্মৃতি। কারণ তাদের তৈরি তৈজসপত্রের স্থান দখল করেছে বিভিন্ন আধুনিক ওয়ার্কশপে তৈরি হওয়া রেডিমেড দা, বটি, কাস্তেসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন  হাট ও কামার এর কর্মশালা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। গনগনে আগুন থেকে গরম লোহার পাত পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পশু জবাই করার নানান সরঞ্জাম। এ কাজে কেউ কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন, কেউ আবার লোহা পেটাচ্ছেন। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্রেতারা। কেউ দা কিনছেন, কেউ ছুরি, কেউবা আবার চাপাতি কিনছেন।
কামারপাড়ায় প্রকারভেদে বিভিন্ন দামে এসব সরঞ্জাম বিক্রি করা হচ্ছে। বড় ছুরির দাম ১ হাজার থেকে ২ হাজার হাজার টাকা, ছোট ছুরির ২০০ থেকে ৬০০ টাকা, দা ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা, বঁটি ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ১২০০ থেকে  ২৫০০ টাকা এবং চাপাতি ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকা। 
উপজেলার গোবিন্দাসী হাটে গিয়ে নির্মল, শংকর ও বরুণ কামার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই একমাসের আয়ের ওপরই তাদের সারা বছরের জীবিকা নির্ভর করে। সারাবছর তেমন কাজের চাপ না থাকলেও বছরে কোরবানি ঈদে কাজের ব্যস্ততা অনেক গুন বেড়ে যায়। এজন্য একটু বাড়তি আয়ের জন্য উপজেলার বিভিন্ন হাটে হাটে গিয়ে তারা কাজ করেন।
কামাররা আরও জানান, প্রতিটি পুরোনো ছুরিতে শান দিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতিটি বটি দা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নিচ্ছি এবং প্রতিটি চাপাতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। কয়লা ও লোহার দাম অনেক বেশি। তাই তৈরি করা সরঞ্জাম বেচাকেনা বাড়লেও লাভ কম। তবে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কামারদের কাজ করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের দৈনিক পারিশ্রমিক হিসেবে ইনকাম হচ্ছে ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকা। 
এদিকে একাধিক ক্রেতারা জানান, আসন্ন ঈদে পশু কোরবানিকে ঘিরে কামারদের কাজের চাপ বেড়েছে। এতে বছরের অন্য সময়ের তুলনায় প্রতিটি ছুরি, দা, বঁটি ও চাপাতি, শান দিতে তাদের কাছে ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হচ্ছে।