আব্দুল মজিদ মল্লিক,
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ডধারীদের কাছ থেকে চাল নিতে এক হাজার টাকা করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে এই টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাকে সহযোগিতা করেছেন ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম রিঙ্কু, মহিলা সদস্য শাহানাজ পারভীন ও গ্রাম পুলিশ আলামিন,এমন অভিযোগও করেছেন অনেকে।
এই ঘটনায় সোমবার দুপুরে রাইঝোর ব্রিজ মোড় এলাকায় শতাধিক ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, দুঃস্থ নারী উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচির আওতায় দুই বছরের জন্য চাল পেয়ে থাকেন তারা। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নতুন তালিকা না হওয়ায় জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চাল বন্ধ ছিল। পরে পুরোনো তালিকার মেয়াদ বাড়িয়ে একসঙ্গে ৫ মাসের চাল দেওয়া হয়। প্রতিজন পান ১৫০ কেজি করে চাল। আর সেটি নিতে গিয়ে অধিকাংশের কাছ থেকেই এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ইউনিয়নে মোট ২৮১ জন কার্ডধারীর মধ্যে অন্তত ২০০ জনের কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
ভুক্তভোগী আঙ্গুরী আক্তার বলেন, “চাল দেওয়ার আগে গ্রাম পুলিশ আলামিন হুমকি দিয়ে চেয়ারম্যানের নাম করে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়। না দিলে চাল দেবে না—এমন কথাও বলে।”
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ইউপি সদস্য রিঙ্কু এক হাজার টাকা না দিলে চাল দেবেন না বলে সরাসরি হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়েছে।”
সাজেদা বেগম, আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যান ও তার লোকজন মিলে এই টাকা নিয়েছে। এটা সরাসরি দুর্নীতি।
এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, “জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে জনগণ সেবা প্রত্যাশা করে। কিন্তু তারা যদি চাঁদা তোলে, সেটা দুঃখজনক। তদন্ত করে দোষীদের বিচার হওয়া উচিত।”
অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ আলামিন বলেন, “চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্যের নির্দেশে আমি ৪০ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। নিজে থেকে করিনি।”
তবে ইউপি সদস্য রিঙ্কু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কাউকে টাকা দিতে বলিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”
প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, “যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে জানায়নি কেন? আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।”
নওগাঁ সদর উপজেলার ইউএনও ইবনুল আবেদীন বলেন, “ভিজিডির চাল নিতে উপকারভোগীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। কেউ নিয়ে থাকলে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মতামত