সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (০৪ মে) বিকেলে সুন্দরবনের লতিফের ছিলা নামক জায়গায় আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের কর্মকর্তা, বনরক্ষী, মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক সুলতান, মোরেলগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আমরবুনিয়া এলাকায় পৌঁছায়। তবে সন্ধ্যা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ফায়ারফাইটিংয়ের মেশিন ও যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছাতে পারেনি। আগুন নেভানোর কাজও শুরু হয়নি।
ঘটনাস্থল থেকে ফেরাবনরক্ষী ও স্থানীয়রা জানান, আমরবুনিয়া এলাকার লতিফের ছিলা এলাকায় অনেক জায়গা জুড়ে আগুন লেগেছে। সুন্দরবনের মাটির উপরে থাকা বিভিন্ন গাছের পাতার স্তুপের মধ্যে আগুন জ্বলছে। ৫০ টি জায়গায় আগুন জ্বলছে। দেড় কিলোমিটার জুড়ে হবে আগুনের ব্যপ্তি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন মোংলার স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়মুজ্জামান বলেন, বন বিভাগের মাধ্যমে খবর পেয়ে মোরেলগঞ্জ ও মোংলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট আমরবুনিয়া এলাকায় পৌঁছেছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যেখানে আগুন লেগেছে, সেখান থেকে পানির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। যার কারণে আমরা এখন পর্যন্ত আগুন নির্বাপনের কাজ শুরু করতে পারিনি। সন্ধ্যা হওয়ায় আমরা ফিরে এসেছি। রবিবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বনের মধ্যে প্রবেশ করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করব।
আগুনের বর্তমান পরিস্থিতি কেমন সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বনের ভেতর প্রচুর পরিমাণ গাছের শুকনো পাতা রয়েছে যার কারণে আগুনটা বাতাসে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। তবে আগুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে যাতে না পড়ে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
আগুন নেভাতে যাওয়া সিপিজি সদস্য মণিময় মন্ডল বলেন, বনভূমির বিভিন্ন স্থানে এখনো আগুন জ্বলছে। আগুনের প্রচণ্ড তাপে ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। কাছাকাছি কয়েকটি জায়গার আগুন আমরা নেভাতে পারলেও এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন যাতে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সন্ধ্যার ভিতর বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সাথে আমরা শুকনো গাছ অপসারণ করেছি। বিভিন্ন স্থানে ছোট ড্রেন কেটে রেখেছি। গহীন বনে অনেক হিংস্র প্রাণী আছে এবং একই সাথে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আগুন নেভানোর কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শোনার পর বন বিভাগ ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা সেখানে ছুটে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এখনো সেখানে আগুন জ্বলছে। কাল সকাল থেকে আবারও আগুন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু হবে।
বনের মধ্যে কিভাবে আগুন লেগেছে বা কি পরিমাণ জায়গায় আগুন লেগেছে এমন প্রশ্নে ডিএফও বলেন, আগুন লাগার কারণ এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি। কি পরিমান জায়গা জুড়ে আসলে আগুনের ব্যাপ্তি তাও জানা যায়নি। আগুনের পরিমাণ, আগুনে ক্ষয়ক্ষতি ও আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে প্রদান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হবে এবং তাদের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক স্কুলের জমি দখল ও গাছ কাটার অভিযোগ
মুন টাইমস নিউজের এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
মতামত