সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং প্রতারণার অভিযোগে মো. মিজানুর রহমান নামের এক ভণ্ডপীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে শ্যামনগরের ধুমঘাট অন্তাখালী গ্রামে তার নিজ আস্তানা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার জামাতা ও সহযোগী মো. আবু নাইমকেও আটক করা হয়।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সিদ্দিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি, যিনি প্রতারণা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তোলেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মিজানুর রহমান নিজেকে ‘আল্লাহ পাকের কুতুব ও ওলি’ দাবি করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন। তিনি ‘অন্তঃচক্ষু’ খুলে দেওয়ার নাম করে মানুষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। এর পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে ভক্তদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
বাদী সিদ্দিকুল ইসলামের দাবি, মিজানুর রহমানের নির্দেশনায় তার জামাতা আবু নাইম একটি বই প্রকাশ করেন, যেখানে মহান আল্লাহ এবং রাসুল (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য রয়েছে। বইটির নাম ‘শরীয়তের মানদণ্ডে ওলিগণের হালত’। এতে দাবি করা হয়েছে, মানুষের ইচ্ছায় আল্লাহ তার হুকুম পরিবর্তন করতে পারেন এবং বান্দারা সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে পারে।
মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি চাঁদপুর, শরীয়তপুর এবং ঢাকার ভুক্তভোগীদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করেছেন।
এছাড়া, তিনি নিজের ছেলেকে রাসুলের জামাতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে নানা আজগুবি তথ্য প্রচার করতেন।
গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান ও তার জামাতা আবু নাইমকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, মিজানের গ্রেপ্তারের খবর শ্যামনগরজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে আনন্দ মিছিল বের হয়, যাতে স্থানীয় বাসিন্দা, আলেম-ওলামা এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
মতামত