সারাদেশ

বীরগঞ্জে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির: ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন

বীরগঞ্জে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির: ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন

প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সন্ধ্যা ৬:৩৫

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে প্রায় ২০ বছর ধরে পাশাপাশি অবস্থান করা মসজিদ ও মন্দির ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। 

এখানে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা কোনো মতবিরোধ ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্মীয় উপাসনা পালন করে আসছেন।

বীরগঞ্জের ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ায় প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো বিষ্ণু মন্দিরের উত্তরে সংলগ্নভাবে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দামাইক্ষেত্র জামে মসজিদ। ইটের দেয়াল দিয়ে বিভক্ত এই দুই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রীতির এক বিরল মেলবন্ধন হিসেবে স্থানীয়দের কাছে স্বীকৃত।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, মন্দিরে পূজা-অর্চনার সময় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সহযোগিতা করেন, অন্যদিকে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করার সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শান্ত পরিবেশ বজায় রাখেন।

সার্বজনীন বিষ্ণুমন্দিরের পূজারী তৃপ্তি রানী রায় (৬৬) ও উজ্জ্বল চন্দ্র রায় (৪৫) জানান, আমরা ৪০ বছর ধরে এখানে পূজা-অর্চনা করছি, কখনো কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হইনি। বরং স্থানীয় মুসলমানরা আমাদের সহযোগিতা করে থাকেন।

মসজিদের সদস্য তুহিন ইসলাম বলেন, আমরা ধর্মীয় সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করছি। হিন্দু-মুসলিম সবাই একে অপরের প্রতিবেশী হিসেবে সহমর্মিতা দেখাই।

বীরগঞ্জ উপজেলা হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক টিকা রাম রায় বলেন, একই দেওয়ালের এপিঠ-ওপিঠে দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। সবাই মিলেমিশে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করি।

নিজপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিস বলেন, এখানে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরল বন্ধন রয়েছে। আমরা চাই, ভবিষ্যতেও এই সম্প্রীতির ধারা অব্যাহত থাকুক।

বীরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল গফুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ দৃষ্টান্ত সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। 

তিনি বলেন, এখানকার মুসলিম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে রয়েছে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।

বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে এলাহী বলেন, এক পাশে পূজা-অর্চনার ধূপের গন্ধ, অন্য পাশে আতরের সুগন্ধ—এমন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ।