শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে পদ্মার তীরবর্তী টি-বাঁধ ও পাশের শ্রীরামপুর এলাকায় প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফোরামের উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজশাহীর পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর স্বেচ্ছাসেবীরা অংশগ্রহণ করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাঁধের পাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পাখি শিকার রোধে ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়। বক্তারা পাখি নিধনের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে বলেন, শীত মৌসুমে রাজশাহীর পদ্মার চরে দেশীয় ও অতিথি পাখির আগমন ঘটে। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি বিষটোপ ও কারেন্ট জাল দিয়ে এসব পাখি হত্যা করছে এবং তা হাঁসের মাংস বলে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বিক্রি করছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. বি. কে. দাম। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদের পরিচালনায় কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফাহাদ ইকবাল, কোষাধ্যক্ষ মো. রমজান আলী সরকার, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. ফিরোজ আলী এবং সদস্য এ.এইচ.এম. আসাদুজ্জামান, জয়ন্ত কুমার সরকার, ইসতিয়াক শাহরিয়ারসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবীবৃন্দ।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদনে সহায়তা করে, বীজ বিস্তারে ভূমিকা রাখে এবং প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে। পাখি নিধন শুধুমাত্র জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি নয়, বরং মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। বিষটোপে মারা যাওয়া এসব পাখি বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এছাড়া, বক্তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাখি নিধনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। শুধুমাত্র অর্থদণ্ড বা স্বল্পমেয়াদী শাস্তি প্রদান করে এই অপরাধ রোধ করা সম্ভব নয়। পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে এবং স্থানীয় জনগণকেও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা পাখি নিধনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তারা বলেন, পাখি প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি এবং এদের সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। পাখির সংখ্যা কমে গেলে তা পরিবেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই পাখি শিকার রোধে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
মতামত