সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী দইয়ের মেলা।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী চলমান এই মেলা প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য বহন করছে এবং মেলা উপলক্ষে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
এই মেলায় স্থানীয় ঘোষরা তাদের তৈরি দই নিয়ে আসেন এবং তার সাথে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন যেমন- ঝুরি, মুড়কি, চিড়া, মুড়ি, বাতাসা, কদমা সহ নানা রসনা বিলাসী খাবারের বেচাকেনা হয়। তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি রজত ঘোষ জানান, এই দইয়ের মেলা প্রথম প্রচলন করেছিলেন তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর। জমিদার নিজে দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন এবং তাঁর বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নও দই দিয়ে করা হতো। সে সময় থেকে প্রতি বছর শীত মৌসুমে শ্রী পঞ্চমী তিথিতে এই মেলার আয়োজন হয়ে আসছে।
বর্তমানে মেলায় বিভিন্ন অঞ্চলের দইয়ের স্বাদ ও নামের ভিন্নতা দেখা যায়, যেমন- বগুড়ার দই, ক্ষীরসা দই, শাহী দই, চান্দাইকোনার দই, শেরপুরের দই, টক দই, শ্রীপুরী দই ইত্যাদি। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ ও দইয়ের পাত্রের দাম বেড়েছে, যার কারণে দইয়ের দামও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মেলায় আসা ক্রেতারা জানান, প্রতিবছর তারা এই মেলা থেকে দই কিনতে আসেন এবং এখানে পাওয়া দইয়ের স্বাদ ও গুণ অতুলনীয়। তবে কিছু ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, বর্তমানে সড়া বা খুঁটির উপর বিক্রি হওয়া দইয়ের পাত্রের ওজন বেশী হওয়ায় তারা ঠকছেন।
তবুও, মেলা এক দিনের হলেও চাহিদা থাকায় মেলায় আসা কোনো দইই অবিক্রিত থাকে না, এবং এটি তাড়াশের ঐতিহ্য হিসেবে এক অনন্য স্থান ধরে রেখেছে।
মতামত