দারিদ্র্যকে জয় করে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মাদলা গ্রামের চাঁদনী খাতুন। তিনি এক দরিদ্র রিকশাচালকের মেয়ে। চাঁদনীর বাবা চাঁদ আলী রিকশা চালান, আর মা পার্শ্ববর্তী একটি কারখানায় কাজ করেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে চাঁদনী সবার বড়।
কঠিন অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে চাঁদনী ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন। কাকিলামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে পোতাজিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে শাহজাদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন।
চাঁদনী শুধু শিক্ষায় মনোযোগী নন, সংসারের কাজেও তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। বাবা-মা কাজে বাইরে থাকলে ছোট ভাই-বোনের দেখভাল করাসহ ঘরের সব কাজ সামলান তিনি। পাশাপাশি অবসরে হস্তশিল্প তৈরিতেও পারদর্শী এই মেধাবী শিক্ষার্থী।
চাঁদনীর বাবা চাঁদ আলী বলেন, রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়, এর মধ্যে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো কঠিন ছিল। কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি আমার মেয়ে ডাক্তার হবে। তার মেডিকেলে চান্স পাওয়ার খবরে আমরা আনন্দিত, তবে এখন ভর্তির খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া চাঁদনী বলেন, আমরা গরিব, তাই জানি দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা পাওয়া কতটা কঠিন। আমি ডাক্তার হয়ে অসহায়দের সেবা করতে চাই। তবে মেডিকেলে পড়ার খরচ জোগাড় করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
চাঁদনীর এই সাফল্যে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে। তবে তার উচ্চশিক্ষার পথ সহজ করতে প্রয়োজন সহায়তা। সংশ্লিষ্ট মহল যদি এগিয়ে আসে, তবে চাঁদনীর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।
মতামত