জাহাঙ্গীরনগরে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমৃত্যু গণঅনশনে ৮ শিক্ষার্থী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৮ শিক্ষার্থী আমৃত্যু গণঅনশন পালন করছেন।

২ ফেব্রুয়ারি (রোববার) সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়। দাবির পুরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা জানান, ২৪ের গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল ও যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে অনেককেই জীবন দিতে হয়েছিল। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর সেই কোটা নিয়ে আবারও অনশনে বসতে হচ্ছে, যা তাদের জন্য হতাশাজনক এবং লজ্জার বিষয়। ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কারণে গরীব কৃষক ও শ্রমিকের সন্তানরা বঞ্চিত হচ্ছে, তাই তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিরতরে পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করতে আমৃত্যু অনশনে বসেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আমৃত্যু গণঅনশন পালনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন: মুয়িদ মুহম্মদ ফাহিম (ভূগোল পরিবেশ ৪৮ ব্যাচ), নাহিদ হোসেন ইমন (সরকার ও রাজনীতি ৪৯ ব্যাচ), নাজমুল ইসলাম লিমন (নৃবিজ্ঞান ৫০ ব্যাচ), মোহাম্মদ রায়হান (মার্কেটিং ৫০ ব্যাচ), গালিব হোসেন (গণিত ৫০ ব্যাচ), নাদিয়া রহমান অন্বেষা (ম্যানেজমেন্ট ৫১ ব্যাচ), মেহরাব তূর্য (ম্যানেজমেন্ট ৫১ ব্যাচ), জাইবা জাফরিন (আইন ও বিচার ৫১ ব্যাচ) এবং মোহাম্মদ আলী চিশতি (ইংরেজি ৫৩ ব্যাচ)।

অনশনে বসা নৃবিজ্ঞান ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, পোষ্য কোটার মতো বৈষম্য আর নেই। আমরা বৈষম্যহীন এক নতুন বাংলাদেশের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছি। অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গলার কাঁটা হিসেবে পোষ্য কোটা এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান, যা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের অন্তরায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদ হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি রয়েছে, তা আমরা গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে চাই। ২৪ের গণঅভ্যুত্থানে আমাদের প্রাণের দাবি ছিল—মেধা দিয়েই আমাদের মূল্যায়ন হবে, কোনো কোটা দিয়ে নয়। কিন্তু অভ্যুত্থানের পরও এমন অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বিদ্যমান, যা আমাদের জন্য লজ্জার।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বিদ্যমান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে এই কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছি, যেহেতু এই কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই, এটি সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।