রাজনীতি

একমাত্র বিএনপিই পারবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ গড়তে: তারেক রহমান

একমাত্র বিএনপিই পারবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ গড়তে: তারেক রহমান

প্রকাশিত : ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাত ১০:০২

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা যদি শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থের জন্য তর্কে লিপ্ত হই, তাহলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার। রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজ থেকে আমরা যদি পিছিয়ে পড়ি, তাহলে দেশ ও দেশের জনগণের ক্ষতি হবে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আব্বাস উদ্দিন খাঁন মডেল কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মান্নান, এবং অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সিরাজুল ইসলাম ও জহিরুল হক খোকন।

তারেক রহমান বলেন, দেশকে রক্ষা করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। একমাত্র বিএনপিই পারবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ গড়তে। এজন্য দলের নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে সেভাবেই নিজেদের উপস্থাপন করতে হবে। দেশের জনগণ এখন আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা জানতে চায়, আমরা কীভাবে দেশকে সাজাব, কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার আজ পলাতক। তবে স্বৈরাচারের মাথাটা শুধু পালিয়েছে, কিন্তু তার অবশিষ্ট অংশ এখনো রয়ে গেছে। তারা বিভিন্নভাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, নিজেদের অবস্থান গোছাতে চাচ্ছে এবং দেশকে নিজেদের দখলে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।

তারেক রহমান বলেন, আগামী দিনে সংসদ কিভাবে পরিচালিত হবে, সংসদের মেয়াদ কতদিন হবে, একজন মানুষ কতবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন—এসব বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু আমরা যদি এসব নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত আলোচনা করি, তাহলে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজ থেকে পিছিয়ে পড়ব। আর যদি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজ থেকে পিছিয়ে যাই, তাহলে দেশ ও দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অস্ত্রের মাধ্যমে জনগণের ভোট দেওয়ার ক্ষমতা হরণ করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, কখনো ডামি নির্বাচন হয়েছে, কখনো ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে। উন্নয়নের নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে, অথচ কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, নির্বাচনসহ সব ব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামোর এই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া যত দ্রুত শুরু করা যাবে, দেশ তত দ্রুত উন্নতি লাভ করবে। বিএনপি-ই একমাত্র দল, যারা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশকে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। ইতোমধ্যে আমরা এসব বিষয়ে একটি রূপরেখা দিয়েছি, যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সবক্ষেত্রে উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আদর্শ থাকা উচিত, কিভাবে দেশের মানুষের মঙ্গল করা যায়। ১৯৭৫ সালে দেশ যখন ভেঙে পড়েছিল, তখন জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নিয়ে দেশ গড়েছিলেন। স্বৈরাচার পতনের পর দেশ যখন ধ্বংসের মুখে পড়েছিল, তখন খালেদা জিয়া দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। বিএনপির সেই ঐতিহ্য ও দায়িত্ববোধ বজায় রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। গণতন্ত্রের পক্ষে প্রতিটি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করা হবে।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া। এছাড়াও কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, কবীর আহমেদ ভূঁইয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ শামিমসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা বক্তব্য দেন।