চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় মানবসেবায় নিয়োজিত ‘আলোর পথে’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
শাহবাজপুর ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে এবং শুরু থেকেই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে একের পর এক জনকল্যাণমূলক কাজ করে আসছে। এটি একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক দাতব্য সংস্থা যা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ উন্নয়ন, ক্রীড়া ও অন্যান্য মানবকল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে।
সংগঠনটি গঠনের পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিভিন্ন সময় তারা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন, মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, পথশিশুদের সাহায্য, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ এবং এতিমদের জন্য ইফতার আয়োজনের মতো নানা সমাজসেবামূলক কাজ পরিচালনা করেছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এবং দরিদ্রদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
‘আলোর পথে’ সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ কাসেদ আলী বলেন, আমাদের লক্ষ্য সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। শুরুতে আমরা ছোট পরিসরে কাজ করলেও বর্তমানে আমরা শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষকে আমরা সাহায্য করতে পেরেছি।
সংগঠনের মানবসেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন, যেখানে দরিদ্র মানুষদের জন্য রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও অন্যান্য চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া, প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারে।
এ বিষয়ে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রেজাউল করিম বলেন, এই সংগঠনটি মানবসেবার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সংগঠনের সদস্যরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে চাইছে। আমরা চাই, তাদের এই কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হোক।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আরাফাত হোসেন বলেন, এই সংগঠনটি গড়ে তোলার পেছনে অনেকের পরিশ্রম ও সহযোগিতা রয়েছে। এটি কেবল শাহবাজপুর ইউনিয়নে সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ভবিষ্যতে আমরা এই সংগঠনকে আরও সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছি।
সংগঠনটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প, যেখানে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ ও টিউটরিং সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া, তারা একটি পাবলিক পাঠাগার স্থাপন ও নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণে কাজ করার পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে।
মতামত