সারাদেশ

সরিষার হলুদ শোভায় আক্কেলপুর উপজেলা: কৃষকদের আয়ের নতুন দিগন্ত

সরিষার হলুদ শোভায় আক্কেলপুর উপজেলা: কৃষকদের আয়ের নতুন দিগন্ত

ছবি : হলুদ বর্ণে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ।ছবিটি আক্কেলপুর উপজেলা রোয়ার গ্রামের মাঠ থেকে তোলা


প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, সন্ধ্যা ৬:৩৯ আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, সন্ধ্যা ৮:০০

সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে জয়পুহাটের আক্কেলপুর উপজেলার ফসলের মাঠ। এসব মাঠে যেন প্রকৃতি নিজেই শীতের মাঝেও বসন্তের রঙ ছড়িয়ে দিয়েছে।

উপজেলার প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়া এই হলুদ শোভা, মৌমাছি, পোকামাকড় এবং বিভিন্ন পাখির আগমনে যেন এক প্রাণবন্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় এখন সরিষার চাষ ব্যাপকভাবে চলমান।

বিশাল সরিষা ক্ষেতগুলোকে দূর থেকে দেখতে মনে হয় যেন একটি হলুদ চাদর বিছানো। কৃষকরা জানাচ্ছেন, যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে, তবে সরিষার চাষ তাদের জন্য লাভজনক হতে পারে। তারা মনে করছেন, শীতের শেষে সরিষা ঘরে তুলেই ধান চাষ শুরু করতে পারবেন। তবে চলতি মৌসুমে সরিষার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৪১০ হেক্টর জমির হলেও, আলুর চাহিদার কারণে অনেক কৃষক সরিষার পরিবর্তে আলু চাষে ঝুঁকেছেন।

এ বছর সরিষার চাষে কৃষকরা বারি ১৪ এবং বারি ১৮ জাতের সরিষার আবাদ করছেন, যা প্রায় ৯০% ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে। আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের তেমারিয়া গ্রামের কৃষক রাশেদুল ইসলাম পাইলট জানান, গত বছর ৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলেন। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এই মৌসুমে তিনি আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে প্রতি বিঘা জমি থেকে ২৪ মণ সরিষা উৎপাদন হবে।

তিলকপুর ইউনিয়নের শিয়ালাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. তারিকুল ইসলাম জানান, আলু চাষে ঝুঁকি বেশি হলেও সরিষা চাষে খরচ কম এবং ফলনও ভালো হয়। গত বছর ৪ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছিলেন, এবার তিনি সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার ফলন কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ মণ হবে এবং প্রতি মণ সরিষার দাম ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, রায়কালি ইউনিয়নের নারিকেলী গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, সরিষার আবাদের পর ধানের ফলনও ভালো হয়। তিনি জানান, গত বছর সরিষার আবাদে লাভের পর এবার তিনি আগাম জাতের ধান রোপণ করেছেন এবং পরে ৭ বিঘা জমিতে সরিষা বোপণ করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, সরিষা আক্কেলপুর উপজেলায় একটি সম্ভাবনাময় ফসল। যদিও এই বছর আলু চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেশি, তবে আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করা যাচ্ছে এবং কৃষকরা এ থেকে অনেক লাভবান হবেন।

বর্তমানে উপজেলায় ১ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে, এবং কৃষকরা উল্লিখিত মৌসুমে বাম্পার ফলনের আশাবাদী।