বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতীর স্মৃতি আজ বিলুপ্তির পথে। মধ্যযুগের বিশিষ্ট কবি চন্দ্রাবতীর জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ জেলার নীলগঞ্জ গ্রামে অবস্থিত তাঁর ঐতিহাসিক বাড়িটি অবহেলা ও অযত্নের শিকার হয়ে জীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
চন্দ্রাবতী, যিনি ১৫ শতকের শেষ দিকে জন্মগ্রহণ করেন, বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী রামায়ণ অনুবাদক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর পিতা দ্বিজ বংশীদাস, যিনি মনসামঙ্গল কাব্যের স্রষ্টা, নরসুন্দা নদীর পাড়ে তাঁর জন্য একটি মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু যুগের বিবর্তনে নরসুন্দা নদী মৃতপ্রায় হয়ে পড়ায় সেই বাড়ি এবং মন্দিরও হারিয়ে যেতে বসেছে।
বর্তমানে চন্দ্রাবতীর ঐতিহাসিক দোতলা বাড়িটির ওপরের অংশ ঝোপঝাড়ে ঢেকে গেছে। নিচতলায় কিছু লোক বসবাস করলেও সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই। বাড়িটি দেখাশোনার অভাবে এর ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে চন্দ্রাবতীর স্মৃতিবিজড়িত এই স্থানটি আজ অবহেলিত। বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল অধ্যায় চন্দ্রাবতীকে নিয়ে আজও গবেষণা চলছে, তবে তাঁর স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।
স্থানীয় বাসিন্দারা এবং সচেতন মহল বাংলা সাহিত্যের এই অমূল্য ঐতিহ্য রক্ষায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাঁরা দ্রুত চন্দ্রাবতীর বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য সংস্কার কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন।
চন্দ্রাবতী রচিত রামায়ণ বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে এক অনন্য সংযোজন। তাঁর মতো একজন নারীর কীর্তি আজও আমাদের প্রেরণা জোগায়। বাড়িটি সংরক্ষণের মাধ্যমে চন্দ্রাবতীর স্মৃতি অমর রাখার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর কীর্তি তুলে ধরা জরুরি।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী কবির স্মৃতিবিজড়িত এই স্থানটি সংরক্ষণে সবার সম্মিলিত উদ্যোগই পারে ঐতিহ্যটিকে নতুন প্রাণ দিতে।
মতামত