গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিন ধানঘড়া গ্রামের মৃত সামিউল বাড়ির রাজ্জাকের কন্যা ফাতেমা তুজ জোহরা এবং গাইবান্ধা সদর উপজেলার শহরস্থ পশু হাসপাতাল রোডের আমজাদ হোসেনের পুত্র আসিফ ফয়সাল লেলিনের মধ্যে ৬ আগস্ট ২০১৮ সালে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী বিয়ে হয়েছিল।
বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য জীবন অশান্তিতে পরিণত হয় এবং নানা ধরনের ঝগড়া-ঝাটি, মারপিটসহ অত্যাচারের শিকার হন ফাতেমা। তার পিতা মৃত্যুবরণ করার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়, এবং ফাতেমা তুজ জোহরা শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে পিত্রালয়ে আশ্রয় নেন।
কিছুদিন পর, মা তাকে স্বামীর বাড়িতে রাখতে চাইলেও যৌতুক লোভী স্বামী লেলিন শ্বশুরের রেখে যাওয়া টাকা ও সম্পত্তি দাবি করেন। তার সুখের জন্য অসহায় মা বাধ্য হয়ে ৩ তলা বাড়ী বিক্রি করে ৮ লক্ষ টাকা জামাইকে দেন। এর পর থেকে লেলিন একাধিকবার শ্বশ্বড়ী থেকে টাকা নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেন ফাতেমার নামে ব্যাংকে ফিক্স ডিপোজিট করার, কিন্তু তিনি কোন টাকা জমা রাখেননি। প্রতারণা প্রকাশ হওয়ার পর, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।
পিতা-মাতার উস্কানিতে লেলিন বেপরোয়া জীবনযাপন শুরু করেন। তিনি চাকরি ও ব্যবসা করার পাশাপাশি শ্বশ্বড়ীর ব্যাংক থেকে ২০ হাজার টাকা তুলে ব্যবসা করেন, কিন্তু কিছুদিন পর সেই ব্যবসা বন্ধ করে দেন। শ্বশ্বড়ী টাকার চাপ দিলে, লেলিন তারিখ ছাড়াই একটি চেকের পাতা স্বাক্ষর করে দেন। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায় যে, ঐ একাউন্টে কোন টাকাই নেই।
এই প্রতারণার ফলে ফাতেমা তুজ জোহরা অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে তিনি খালার বাসায় চলে যান। এরপর, লেলিন ঢাকার সাভারে বসবাস করে এবং জোহরা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করতে থাকেন।
জোহরা ১৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে স্বামীকে ডিভোর্স নোটিশ পাঠান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লেলিন তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে থাকেন। গত ৮ জানুয়ারি ২০২৫ তার দাদা মৃত্যুবরণ করলে, জোহরা তার বোনদের নিয়ে দাদাকে দেখতে যান। পরদিন বাড়ি ফেরার পথে বাদিয়াখালি সিএনজি স্ট্যান্ডের সামনে লেলিন অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালায় এবং জোহরাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তার মা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
বর্তমানে লেলিন জেলহাজতে থাকলেও, তার অন্যান্য সহযোগীরা জোহরা ও তার পরিবারকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছে এবং নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। এই পরিস্থিতিতে, আজ সকালে গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা ও সুবিচারের দাবি জানানো হয়েছে।
মতামত