জামালপুরের ইসলামপুর রেসিডেন্সিয়াল মডেল মাদ্রাসায় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দিনব্যাপী জমকালো পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শীতকালীন এই উৎসব দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় জমিয়েছেন দর্শনার্থীরা। ঐতিহ্যের স্পর্শ ও মনমুগ্ধকর স্বাদে মুখরিত ছিল পুরো আয়োজন।
সকাল ১০টায় মাদ্রাসার সভাপতি আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন বিএসসি উৎসবের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার পরিচালক ও অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হাই সাদ্দাম।
উৎসবের প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক শাজাহান সিরাজ, অধ্যক্ষ, গুঠাইল মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিএম কলেজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিনাডুলি ফাজিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হামিদ, পশ্চিম নন্দনেরপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুল মালেক এবং ইসলামপুর সরকারি নেকজাহান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. ফজলুল হক। ইসলামপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্র এবং অভিভাবকদের উপস্থিতি উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
উৎসবে প্রায় অর্ধশতাধিক স্টল ছিল, যেখানে জামাইবরণ, জিরা, পাটিসাপটা, তালপিঠাসহ গ্রাম-বাংলার প্রায় বিলুপ্তপ্রায় হরেক রকমের পিঠা প্রদর্শিত হয়। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে খেজুর রস থেকে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া সরাসরি প্রদর্শন করা হয়, যা দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
শীতকালীন পিঠা উৎসব শুধু খাবারের স্বাদ গ্রহণেরই নয়; এটি বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করার এক প্রয়াস। ভাপা, পাটিসাপটা, দুধ চিতই, নকশি পিঠাসহ বিভিন্ন পিঠার মাধ্যমে মানুষ নিজেদের শিকড়ের সাথে পরিচিত হয়। এই ধরনের আয়োজন নতুন প্রজন্মের মধ্যে সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলে এবং পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।
ইসলামপুর রেসিডেন্সিয়াল মডেল মাদ্রাসা আয়োজিত এই পিঠা উৎসব স্থানীয় ঐতিহ্যকে নতুনভাবে তুলে ধরতে ভূমিকা রেখেছে। এমন উদ্যোগে এলাকার মানুষ, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা দারুণ অনুপ্রাণিত হয়েছেন। পিঠার এই উৎসব শুধু খাবার নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি সফল প্রচেষ্টা।
মতামত