সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের ক্ষোতবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বিপিন চন্দ্র কর্মকার ও তার স্ত্রী অশোকা রানী দারিদ্র্য ও অসহায়ত্বের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রতিবন্ধী তিন সন্তানকে নিয়ে খাস জমিতে জরাজীর্ণ ঘরে তাদের জীবন যেন কষ্টের চূড়ান্ত রূপ।
অশীতিপর বিপিন চন্দ্র স্থানীয় বাজারে ঝাড়ুদারের কাজ করেন। তার সাত সন্তানের মধ্যে চারজন শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। প্রায় ১০ বছর আগে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তান নিতাই হারিয়ে যাওয়ার পর তিনি স্ত্রী এবং বাকি তিন প্রতিবন্ধী সন্তান—শারীরিক প্রতিবন্ধী রতন, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ভবানি এবং মানসিক প্রতিবন্ধী বিপ্লবকে নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সকাল-সন্ধ্যা বাজারে ঝাড়ুদারের কাজ করে সামান্য চাল ও নষ্ট সবজি সংগ্রহ করেই তাদের সংসার চলছে। মাসে বয়স্ক ভাতা এবং দুই প্রতিবন্ধী সন্তানের ভাতা মিলিয়ে যে ২ হাজার টাকা আয় হয়, তা দিয়ে এক বেলার খাবারও জোগানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সপ্তাহের দুদিন হাটবারে কিছু বেশি চাল বা সবজি পেলে দিনে দুই বেলা খাবার হয়। অন্যদিনগুলোতে এক বেলা খেয়েই কাটাতে হয়।
তাদের তিন প্রতিবন্ধী সন্তান বিভিন্ন সময়ে আচরণগত সমস্যা করে, যা সামলানো বৃদ্ধ বিপিন ও তার স্ত্রীর জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া নিজেদের কিংবা সন্তানদের অসুস্থতার সময় কোনো চিকিৎসা বা ওষুধের ব্যবস্থা করাও তাদের সাধ্যের বাইরে।
বিপিন চন্দ্র কর্মকারের একমাত্র স্বপ্ন তার মৃত্যুর পর অসুস্থ সন্তানদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়। তিনি চান, তাদের জন্য একটি টুকরো জমি ও একটি ঘর নিশ্চিত হোক। স্থানীয়রা জানান, পরিবারটি অত্যন্ত অসহায় এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি।
সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে এই পরিবারটির দুর্দশা লাঘব সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয়রা। বিপিন ও তার পরিবারের এই কষ্ট লাঘবে জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। তাই সমাজের সহৃদয় ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন এই পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়ে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করেন।
মতামত