খেলাধুলা

ইনজুরির ধাক্কায় থেমে গেল তাসকিন আহমেদ রিয়াদের প্রতিভাবান ক্যারিয়ার

ইনজুরির ধাক্কায় থেমে গেল তাসকিন আহমেদ রিয়াদের প্রতিভাবান ক্যারিয়ার

প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, বিকাল ৪:৩৩

তাসকিন আহমেদ রিয়াদ, যিনি তাসকিন-রিয়াদ নামে বেশি পরিচিত, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে ১৯৯১ সালের ২ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই ক্রিকেটের প্রতি গভীর অনুরাগ তাকে অন্যান্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।

তার জীবনের প্রথম ক্রিকেট ব্যাটটি ছিল তার বাবার উপহার, যা তার মনে গেঁথে আছে বিশেষ এক স্মৃতি হিসেবে। তিনি তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পিরোজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্পন্ন করেন। স্কুল জীবন থেকেই তিনি ক্রিকেটে নিজের প্রতিভা দেখানো শুরু করেন। তার পরিবার, বিশেষ করে মা-বাবার অনুপ্রেরণা তাকে এই খেলায় এগিয়ে যেতে সহায়তা করে।

তাসকিন তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন বাংলাদেশে ঘরোয়া পর্যায়ের খেলায় অংশ নিয়ে। ২০১৩ সালে ঢাকা মেট্রোর হয়ে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলেন এবং তার প্রতিভা সবার নজর কাড়ে। তবে এই পথ মোটেও সহজ ছিল না। ঢাকায় একটি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হতে হলে তিনি প্রথমে মায়ের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নেন। তার বাবা যখন এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারেন, তখন তিনি অত্যন্ত খুশি হন এবং তাকে আরও সহযোগিতা করেন। বাবার এই উৎসাহ তাসকিনের জীবনের অন্যতম শক্তি হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশে ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছু সাফল্যের পর তাসকিন তার পরিবারের সঙ্গে ওমানে বসবাস শুরু করেন। ওমানের ব্যাংক দোফার টিমের হয়ে খেলার মাধ্যমে তার নতুন যাত্রা শুরু হয়। ২০১৫ সালে ওমান প্রিমিয়ার লিগে তার অভিষেক হয়। মাস্কাট সিটির হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেন। তবে মধ্যপ্রাচ্যের তীব্র গরম এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশ তার জন্য সহজ ছিল না। কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় মনোভাব তাকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।

২০১৭ সালে তার ক্যারিয়ার সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায়। তিনি ডান পায়ের লিগামেন্ট ইনজুরিতে পড়েন। দীর্ঘ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের পরও ইনজুরি পুরোপুরি সেরে না ওঠায় তিনি বেশ কয়েকবার মাঠে ফিরলেও সফল হতে পারেননি। শেষমেশ বারবার একই সমস্যার সম্মুখীন হওয়ায় তিনি অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

তাসকিন রিয়াদ তার জীবনে কঠোর পরিশ্রম, মনোবল এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে অনেক কিছু অর্জন করেছেন। ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা এবং তার জীবনের সংগ্রাম শুধুমাত্র একজন খেলোয়াড় নয়, বরং প্রতিটি মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার নাম। তার পারিবারিক সমর্থন এবং তার নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে জীবনে এগিয়ে নিয়ে গেছে। তার জীবন গল্প জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।