সারাদেশ

মোহনপুরে মদ পানে ৪ জনের মৃত্যু: তদন্তে এএসপি

মোহনপুরে মদ পানে ৪ জনের মৃত্যু: তদন্তে এএসপি

প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, রাত ১০:০৪ আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, রাত ১১:০৮

রাজশাহীর মোহনপুরে দেশীয় মদ (কট) পান করে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন মাদক ব্যবসায়ীও রয়েছেন। এ ঘটনায় রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরও ৪ জন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার বিভিন্ন চেষ্টা চললেও বিষয়টি এখন ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) হেলেনা আখতার সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। তার সঙ্গে ছিলেন মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হান্নানসহ পুলিশের একটি দল।

স্থানীয়দের মতে, করিষা-দূর্গাপুর গ্রামের নির্জন স্থানে নিয়মিত আনন্দ-উল্লাসের ছদ্মবেশে মাদক সেবন করা হয়। ঘটনার দিন টুটুল ও জুয়েলের কাছ থেকে দেশীয় মদ সংগ্রহ করে কয়েকজন তা পান করেন। পরে তারা একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসা নিলেও টুটুল, জুয়েল, মন্তাজ ও একদিল মারা যান। পিন্টু, আকবর, মোনা ও ফিরোজ নামের চারজন রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

নিহত টুটুলের স্ত্রী শীলা বলেন, আমার স্বামী অসুস্থতার কথা জানিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ খেয়েও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। পরে সে মারা যায়।

মন্তাজের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মাদক সেবন করছিল। এবার এই মদ খাওয়ার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। আমি চাই, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা হোক, যেন আর কাউকে আমার মতো স্বামী হারাতে না হয়।

এ ঘটনায় মন্তাজের ছেলে মাসুম রানা মোহনপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। তিনি জানান, যারা এই মদ বিক্রি করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হোক। আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।

তবে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের হুমকি দিচ্ছে, যাতে তারা পুলিশের কাছে কিছু না বলেন। "বিষয়টি জানালে আমাদের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিয়েছে মাদক কারবারিরা। আমরা মাদকমুক্ত এলাকা এবং অপরাধীদের বিচার চাই," বলেন এক গ্রামবাসী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আখতার ঘটনাস্থল থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রকাশ্যে ও গোপনে তথ্য সংগ্রহ করছি। দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে। মোহনপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবেন, আর আমি নিজে তদারকি করব।