ছবি : চলনবিলে সরিষা ক্ষেতে আনন্দে মেতে উঠছে নারী পুরুষ ও শিশুরা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের চলনবিল অধ্যুষিত বিস্তীর্ণ এলাকায় সরিষা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন প্রকৃতি প্রেমী দর্শনার্থীরা। নানা সাজে, সরিষার মাঠে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা, ভিডিও করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তবে দর্শনার্থীদের এই আকর্ষণ চাষীদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দুশ্চিন্তার কারণ।
সরিষা ক্ষেতের মধ্যে প্রবেশ করে দাঁড়ানো, বসা এবং চলাচলের ফলে সরিষার গাছগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাষীরা বাধা দিলেও দর্শনার্থীরা বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না। পরিস্থিতি সামলাতে অনেক চাষী জমির পাশে সাইনবোর্ড লাগিয়ে ছবি তোলা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ বাধ্য হয়ে স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে লাঠি হাতে পাহারা দিচ্ছেন।
দিঘী সগুনা গ্রামের চাষি আব্দুল সালাম জানান, তার জমির সরিষার গাছগুলো দর্শনার্থীদের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে এ বছর সরিষার ফসল থেকে কিছুই ঘরে তুলতে পারবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কামারশোন গ্রামের চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, সরিষা ক্ষেতের বাইরে থেকে ছবি তোলার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও দর্শনার্থীরা জমিতে প্রবেশ করেই ছবি তুলছেন।
তালম এলাকা থেকে আসা একাধিক দর্শনার্থী সরিষা জমির ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করে জানান, সরিষার সৌন্দর্য উপভোগ করতে জমির ভেতরে ঢুকতে হয়। তবে তারা জমির ক্ষতি না করার জন্য সচেতন থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলনবিল এলাকায় এ বছর সরিষার ফুল দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী ভিড় করছেন। তবে এই ভিড় সরিষার ক্ষতির পাশাপাশি মৌমাছিদের পরাগায়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। এতে সরিষার ফলন এবং মধুর উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কৃষি বিভাগ এবং স্থানীয় চাষীরা দর্শনার্থীদের সরিষা ক্ষেতে প্রবেশ না করে পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
মতামত