সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলারে ইসলামপুর গ্রামের সফল কৃষি উদ্যোক্তা মালেক হোসেন। একই জমিতে পেয়ারা, খিরা, পেঁয়াজ, মরিচ ও বেগুন চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। বাগানটি দেখলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে।
একই জমিতে কয়েক ধরনের ফসল আবাদ করে এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন। খোরশেদ আলমের মালেক হোসেনের পেয়ারা বাগানে সাথি ফসল হিসেবে সবজি চাষ দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন এলাকার বেকার যুবকরা। তাকে অনুসরণ করে এখন এলাকায় গড়ে উঠছে একই ধরনের একাধিক বাগান।
মালেক হোসেন জানান, ছোট বেলা থেকেই কৃষি কাজে আগ্রহী ছিলেন। প্রচলিত ফসলের বাইরে বিভিন্ন ফল চাষ করে সফলতাও পেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ছয় বছর আগে নিজের দুই বিঘা জমিতে উন্নত জাতের পেয়ারা বাগান গড়ে তোলেন। প্রতি মৌসুমে পেয়ারা বাগান থেকে আয় করেন লাখ লাখ টাকা। অন্য ফসলের তুলনায় পেয়ারা চাষে লাভ অনেক বেশি। বর্তমানে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে পাঁচ বিঘার পেয়ারা বাগানে গাছের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার।
এরমধ্যে এবছর ৫০ শতক পেয়ারা বাগানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের সবজি। সিরাজগঞ্জ ও আশপাশের জেলা থেকে পাইকাররা বাগানে এসে পেয়ারা কিনে নিয়ে যান। ট্রাকে করে ঢাকার ফলের আড়তে পাঠানো হয় পেয়ারা। সরেজমিন মালেক হোসেনের পেয়ারা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হয়েছে পেয়ারা গাছ।
কোন গাছে ফুল, কোন গাছে গুটি, আবার কোন গাছে ঝুলছে বড় বড় পেয়ারা। পুরো বাগানে গাছভর্তি থরে থরে পেয়ারা ধরে আছে। পেয়ারা গাছের বাগানের মাঝখানে চাষকৃত সবজি। এখানে হরেক রকমের সাথি ফসল আবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন সবজি ফসলের পরিচর্যার পাশাপাশি শ্রমিকেরা নতুন পেয়ারার গুটিগুলো পলিথিন ব্যাগে ভরে দিচ্ছেন।
তারা জানান, পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা এবং কীটনাশক যাতে ফলের গায়ে না লাগে, সে জন্য এই পলিথিন ব্যাগে পেয়ারার গুটি ভরে দেওয়া হচ্ছে। এতে পেয়ারা নিরাপদে থাকবে। পাশাপাশি রংও হবে আকর্ষণীয়। এখন শুধু পেয়ারা বিক্রি করেই মাসে লাখ টাকার ওপরে আয় করছেন তিনি। এলাকার বেকার যুবকদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস খোরশেদ আলম। পেয়ারা চাষ করে বেকারত্ব দূর করা অনেকটাই সম্ভব বলে মনে করেন সফল এই কৃষি উদ্যোক্তা।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মিশ্র বাগান হচ্ছে সামান্য জমিতে অল্প সময়ে স্বল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়ার একটি সময় উপযোগী প্রক্রিয়া। মিশ্র বাগানে উদ্বুদ্ধকরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ কৃষকদের দেওয়া হয়।
মতামত