ছবি : উপজেলা মডেল মসজিদে প্রাক খুতবায় গ্রাম আদালত নিয়ে জনসাধারণের মাঝে সচেতনা বৃদ্ধি
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে প্রাক খুতবায় বাংলাদেশ গ্রাম আদালত নিয়ে জনসাধারণের মাঝে সচেতনা বৃদ্ধির উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পেশ ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতী মুজাহিদ মসজিদে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন জয়পুরহাট জেলা কার্যালয়ের নির্দেশক্রমে (২৭ ডিসেম্বর) শুক্রবার জুম্মার নামাজের প্রাক খুতবায় জনসাধারণকে \\\'গ্রাম আদালত\\\' সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
প্রথমে হাফেজ মাওলানা মুফতী মুজাহিদ গ্রাম আদালত সম্পর্কে ধারণা দেন। তিনি বলেন, \\\'অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে, চলো যাই গ্রাম আদালতে এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ অনুযায়ী, স্থানীয়ভাবে কতিপয় ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। গ্রাম আদালত এক টাকা হতে তিন লক্ষ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারী ও দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ নেই।
এরপর গ্রাম আদালতে কেনো যেতে হবে সেই সম্পর্ক জানান, গ্রাম আদালতে অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে এবং অতি সহজে বিরোধ ও বিবাধ নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে। প্রতিনিধি মনোনয়নে আবেদনকারী ও প্রতিবাদী সমান সুযোগ পায়। পক্ষগণ নিজের কথা নিজে বলতে পারে, আইনজীবী দরকার হয় না। গ্রাম আদালতে সমঝোতার ভিত্তিতে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়, এক বিরোধ থেকে অন্য বিরোধ সৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকে। পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করা হয়। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খুব সহজে বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ পায়।
তারপর গ্রাম আদালত কী কী ধরনের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে সেই সম্পর্কে বলেন, ফৌজদারীর মধ্যে: চুরি, দাঙ্গা, প্রতারণা, ঝগড়া-বিবাদ, কলহ বা মারামারি, মূল্যবান সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, অন্যায় নিয়ন্ত্রণ ও অন্যায় আটক, ভয়ভীতি দেখানো বা হুমকি দেয়া, কোনো নারীর শালীনতাকে অমর্যাদা বা অপমানের উদ্দেশ্যে কথা বলা, অঙ্গভঙ্গি করা বা অন্য কোনো কাজ করা এবং দেওয়ানীর মধ্যে: চুক্তি রশিদ, পাওনা টাকা আদায় সংক্রান্ত, স্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত, অস্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার বা তার মূল্য আদায় সংক্রান্ত, কোনো অস্থাবর সম্পত্তি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় সংক্রান্ত, গবাদিপশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত, কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপুরণ আদায় সংক্রান্ত, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদার ইত্যাদি। সাম আদালতে যে বিরোধগুলো নিষ্পত্তি করতে পারে না।
গ্রাম আদালত যেভাবে গ্রামের জনগণকে সহায়তা করতে পারে: গ্রাম আদালত হলো স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ বা বিবাদ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা যা ন্যায্য বিচার লাভে সহায়তা করে। গ্রাম আদালতে সবাই অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে এবং অতি সহজে প্রতিকার পায়। গ্রাম আদালতে আবেদনপত্র দাখিলের ফিস ছাড়া অন্য কোনো খরচ নেই। গ্রাম আদালত উচ্চতর আদালতের মামলার জট কমাতে সাহায্য করে।
মতামত