সারাদেশ

আক্কেলপুরে খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা

আক্কেলপুরে খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা

ছবি : আক্কেলপুরে খাদ্য গুদামে সরকারি দামের চেয়ে বাজার মূল্য ঊর্ধ্বগতিতে ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা


প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, সকাল ৮:৪৫ আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, দুপুর ১:৫৬

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বাজারে ধানের মূল্য সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। সরকার নির্ধারিত ধানের দাম প্রতি কেজি ৩৩ টাকা এবং চালের দাম প্রতি কেজি ৪৭ টাকা হলেও বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে এ দামে চাল সরবরাহ করতে গিয়ে মালিকদের বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।

মিল মালিকরা জানান, বর্তমানে বাজারে মোটা জাতের ধান, যেমন সুমুন ও গুটি স্বর্ণা প্রতি মণ ১,৪৫০ থেকে ১,৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দামে ধান কিনে চাল উৎপাদন করলে প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশি খরচ পড়ছে। এ কারণে খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে আক্কেলপুরে ৭৩৭ মেট্রিক টন ধান এবং ৫৩৮ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র ১০০ মেট্রিক টন ধান এবং ১৪০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। এ বছর উপজেলায় ৪১টি চালকলের মধ্যে মাত্র ১৩টি চালকল মালিক চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কৃষক রাশেদুল ইসলাম জানান, বাজারে ধানের দাম সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকেরা খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। ধান ক্রয় ব্যবসায়ী শ্রীবাস ঘোষ বলেন, ধানের বাজারদর বাড়ায় কৃষকেরা ভালো দামে ধান বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।

অন্যদিকে মাহিন চালকলের মালিক গোলাম মোস্তফা জানান, বরাদ্দকৃত চাল সরবরাহ করতে গিয়ে প্রায় দুই লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে। চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এ কে এম শাখাওয়াত হোসেন বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় মিলারদের জন্য সরকারি দামে চাল সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শাহানশাহ হোসেন জানান, ধান ও চালের দর বেড়ে যাওয়ায় সংগ্রহ কার্যক্রম কিছুটা শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। তবে চুক্তিবদ্ধ মিলারদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সরবরাহ করতে হবে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, চাল সংগ্রহ অভিযান ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তবে এ মৌসুমে ধান ও চালের ক্রয়মূল্যের অমিলের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।