সারাদেশ

চলনবিলের গুমানী নদীতে অভিনব পদ্ধতিতে মাছ শিকার

চলনবিলের গুমানী নদীতে অভিনব পদ্ধতিতে মাছ শিকার

ছবি : গুমানী নদীতে চলছে অভিনব কায়দায় মাছ শিকার


প্রকাশিত : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রাত ৯:০৯ আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রাত ৯:৫৩

চলনবিলের গুমানী নদীতে অভিনব কায়দায় মাছ শিকারের দৃশ্য দৃষ্টি নন্দন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে সারিবদ্ধভাবে ঝাকি জাল ফেলে মাছ ধরার পদ্ধতি এখন স্থানীয় জেলেদের পাশাপাশি সৌখিন শিকারিদের কাছেও বেশ জনপ্রিয়। 

গত মঙ্গলবার তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, ডিঙ্গি নৌকাগুলো একসঙ্গে সারিবদ্ধভাবে নদীতে চলছে। প্রত্যেক নৌকায় একজন শিকারি ঝাকি জাল (স্থানীয়ভাবে তোরা জাল নামে পরিচিত) নিয়ে প্রস্তুত। প্রথম নৌকা নদীর নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছালে জাল ফেলে, এরপর একে একে অন্য নৌকাগুলোর জাল নদীর বুকে ফুটন্ত ফুলের মতো বিস্তৃত হয়।

নাদোসৈয়দপুর গ্রামের সৌখিন মাছ শিকারি আবু তাহের জানান, অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত ধামাইচ, নওখাদা, রাণীগ্রামসহ আশেপাশের গ্রামের জেলে সম্প্রদায় এবং শিকারিরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে দলবদ্ধভাবে মাছ শিকারে অংশ নেন। এই পদ্ধতিতে মাছ পালানোর সুযোগ পায় না এবং ধরা পড়া নিশ্চিত হয়।

জেলে নিতাই জানান, গুমানী নদীতে বোয়াল, কাতলা, শোল, পাবদা, শিলংসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। সারাদিনের পরিশ্রমে ভাগ্য ভালো হলে ৫০০ থেকে ২,০০০ টাকার মাছ ধরা পড়ে। এটি অনেকের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস।

ধামাইচ গ্রামের সহকারী অধ্যাপক সরোয়ার হোসেন জানান, এ সময় কৃষিকাজ কম থাকে, ফলে অনেকেই বাড়তি উপার্জনের জন্য মাছ শিকারে আসেন। নদীতে মাছ ধরা তাদের জীবিকায় বড় ভূমিকা রাখে।

তাড়াশ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদ বলেন, গুমানী নদী পুনঃখননের ফলে নদীর গভীরতা বেড়েছে এবং মাছের প্রজাতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলে সম্প্রদায়ের আয়ের পথ আরও সহজ হয়েছে।

নদীতে ঝাকি জাল ফেলে মাছ শিকারের এই অভিনব পদ্ধতি শুধু জীবিকা নির্বাহ নয়, সৌন্দর্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। এটি দেখতে প্রতিদিনই আশেপাশের মানুষ ভিড় করছেন নাদোসৈয়দপুর নদীর পাড়ে।