ছবি : তাড়াশে কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা, হুমকিতে পরিবেশ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উর্বর কৃষি জমির ওপর একাধিক অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ভাটার কার্যক্রম কৃষি, পরিবেশ ও জনজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় প্রশাসনের মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হলেও অদৃশ্য প্রভাবের কারণে ভাটা মালিকরা পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে।
তাড়াশ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে সাতটি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে সাদিয়া ও এমএমবি নামের দুটি ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন থাকলেও তা দুই বছর ধরে নবায়ন করা হয়নি। বাকি পাঁচটি ভাটার কোনো অনুমোদন বা জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স নেই। তবে ভাটার মালিকরা দাবি করেছেন, তারা লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন।
এসব ভাটার অবস্থান ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়, উর্বর কৃষি জমিতে এবং স্থানীয় রাস্তাঘাটের পাশে। বর্ষার মৌসুমে ইটভাটার সালফার চলনবিলের পানিতে মিশে ফসল ও মাছের ক্ষতি করে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ভাটাগুলো কৃষিজমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছে, যা জমিকে অনুর্বর করে তুলছে। এর ফলে ফসল উৎপাদনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এলাকার মানুষ, বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দারা বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছেন। ভাটার মালিকদের প্রভাবের কারণে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এ অবস্থায় অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
চলনবিল বাঁচাও আন্দোলনের নেতা মো. আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, এসব অবৈধ ইটভাটা প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে। কৃষি ও পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ এবং পরিবেশবান্ধব নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কোনো ভাটাকে লাইসেন্স দেওয়া হয় না। তিনি দাবি করেন, লাইসেন্স নবায়নের শর্ত পূরণ না করায় ইটভাটাগুলো অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
মতামত