সারাদেশ

প্রকৃতির অপরূপ সাজে সেজেছে তাড়াশের চলনবিল

প্রকৃতির অপরূপ সাজে সেজেছে তাড়াশের চলনবিল

ছবি : নারী-পুরুষের মুঠোফোনে সেলফি তোলার ধুম


প্রকাশিত : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, দুপুর ২:৪৯ আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, বিকাল ৫:০৯

তাড়াশের চলনবিল যেন এক অনন্য রূপে সেজেছে। যেদিকেই চোখ যায়, শুধু হলুদ ফুলের সমারোহ। কাঁচা হলুদের মায়াবী সৌন্দর্যে চলনবিলের প্রকৃতি এক অনন্য রূপ ধারণ করেছে। সবুজের মাঝে হলুদের খেলা যেন প্রকৃতির এক নিখুঁত শিল্পকর্ম। চারপাশে ফুলের মৌ মৌ গন্ধ আর পাখিদের ডানা মেলে উড়াউড়ি চলনবিলকে দিয়েছে এক ভিন্নতর রূপ। এ দৃশ্য উপভোগ করতে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন, আর মুঠোফোনে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চলনবিলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শস্যক্ষেত্রে সরিষার হলুদ ফুল দোল খাচ্ছে। শিশুরা ফুলের সাথে খেলা করছে, আর নারীরা ছবি তোলায় মগ্ন। মিষ্টি রোদের মধ্যে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা। চলনবিল যেন তার যৌবন ফিরে পেয়েছে।

চলনবিলের মাগুড়া এলাকার এক কৃষক সোহাগ উদ্দিন বলেন, এ বছর আমি বোরো ধানের আগে ৩০ বিঘা জমিতে টরি-৭ জাতের সরিষা চাষ করেছি। ফলনও বেশ ভালো হবে বলে আশা করছি।

সগুনা এলাকার কৃষক আলহাজ আলী জানান, তিনি ২০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬ হাজার টাকা। তিনি আশাবাদী, আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৬ মণ সরিষার ফলন হবে এবং বর্তমান বাজারদরে এটি তাকে ভালো লাভ দেবে।

কৃষকরা আরও জানান, সরিষা চাষের ফলে বোরো ধান আবাদে সারের প্রয়োজন কম হয়, জমি পতিত না থাকার কারণে আগাছা গজায় না, এবং সেগুলো পরিষ্কারে বাড়তি খরচ লাগে না।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার হেক্টর জমি, যা ইতোমধ্যেই ছাড়িয়ে গেছে। গত বছরের তুলনায় এবার চাষাবাদ বেড়েছে ৬৭৯ হেক্টর।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, সরিষা চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। ৮৪০০ কৃষককে সরকারিভাবে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের স্বল্পমেয়াদি ধান ব্রি-৯০ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, যাতে সরিষা চাষের জন্য সময় বের করা যায়।

চলনবিলের এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যেমন স্থানীয়দের মুগ্ধ করেছে, তেমনি কৃষকদের জন্যও এনেছে নতুন সম্ভাবনার বার্তা।