সারাদেশ

তাড়াশে সরিষার সোনালী ফুলে কৃষকদের স্বপ্নে নতুন দিগন্ত

তাড়াশে সরিষার সোনালী ফুলে কৃষকদের স্বপ্নে নতুন দিগন্ত

ছবি : চলনবিলে সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে, দিগন্ত জোড়া বিস্তৃত ফসলী মাঠ


প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, রাত ১০:৪৮ আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, রাত ১১:০৮

মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে চলনবিলের বিস্তৃত ফসলী মাঠে আগাম জাতের সরিষার হলুদ ফুল ছড়িয়ে দিচ্ছে এক নতুন সৌন্দর্য। শিশির ভেজা ফুলের পাপড়িতে কৃষকদের রঙিন স্বপ্ন দেখা যাচ্ছে। তাড়াশসহ চলনবিলের নয়টি উপজেলা উত্তরাঞ্চলের মৎস্য এবং শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত, যেখানে মাছ, সবজি, চাল-ডাল এবং সরিষার উৎপাদন বেশ সুনাম লাভ করেছে। তবে এবারের মৌসুমে কৃষকরা সরিষা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন, কারণ গত বছর এর দাম ভালো পাওয়ার পর এবারও ব্যবসা লাভজনক হওয়ার আশা করছেন তারা।

গত মৌসুমে তাড়াশে ১০,৩১২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছিল, কিন্তু চলতি মৌসুমে এই পরিমাণ ১১,০০০ হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরিষা চাষে এবার ৬৭৯ হেক্টর বেশি জমি আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের উৎসাহিত করতে ৮,৪০০ জন কৃষককে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ এবং সার দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যে, তেল জাতীয় ফসল হিসেবে সরিষা চাষ এখন কৃষকদের কাছে লাভজনক একটি ব্যবসা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সরিষার দাম প্রতি মণ চার হাজার টাকার কাছাকাছি, এবং এ বছরের বাজার পরিস্থিতি কৃষকদের আরও আশাবাদী করে তুলেছে। কৃষকরা ইতিমধ্যে জমি প্রস্তুত করে সরিষা চাষ শুরু করেছেন, এবং তারা আশা করছেন এবার বাম্পার ফলন হবে।

তাড়াশের কৃষক মো. আলী বলেন, "সরিষা চাষে খরচ কম, পরিশ্রম কম এবং লাভ ভালো, তাই এটি একটি লাভজনক ফসল। এবছর প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৮ মণ সরিষা পাওয়ার আশা করছি।" অন্যদিকে, কৃষক গোলাম রব্বানীও একই ধরনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

তিনি বলেন, বাজারে তেলের দাম বাড়ায় সরিষার দামও ভালো হবে, আর যেহেতু সরিষা তোলার পর ধানও লাগানো যায়, তাই এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, সরিষা চাষের সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে সরিষা চাষের উপকারিতা তুলে ধরছি। আশা করছি, এবছর সরিষার আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হবে।

বিজয়ের মাসে তাড়াশের সরিষা চাষ এখন কৃষকদের নতুন আশা এবং স্বপ্নের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, যা তাদের আর্থিক উন্নতি এবং সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।