সারাদেশ

সরিষা ফুলের মধু আহরণে ধুম চলনবিলে

সরিষা ফুলের মধু আহরণে ধুম চলনবিলে

ছবি : চলনবিলে বাক্স বসিয়ে কৃষকরা মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে


প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, দুপুর ২:১৪ আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, রাত ৯:৪৫

দেশের বৃহত্তম বিল চলনবিল এখন সরিষার হলুদ ফুলে সুশোভিত। সিরাজগঞ্জ, পাবনা, ও নাটোর জেলার বিস্তীর্ণ এ বিলে রবি মৌসুমে চাষ হওয়া সরিষা থেকে বিপুল পরিমাণ মধু আহরণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

সরিষা ফুলের ক্ষেতজুড়ে গুঞ্জরিত মৌমাছি ও ভ্রমর কৃষকের মনে আনন্দের সঞ্চার করেছে। এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৌচাষিরা এসে বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

চলতি মৌসুমে চলনবিলের বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক পরিমাণে সরিষা চাষ হয়েছে। তাড়াশ উপজেলায় ১১ হাজার ৮০৫ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ১ হাজার ১১৫ হেক্টর, এবং সিংড়ায় ৪ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরিষা থেকে মধু উৎপাদন কৃষকদের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করছে। আমরা মৌচাষিদের প্রশিক্ষণ ও আধুনিক বাক্স দিয়ে সহযোগিতা করছি। সরিষা ক্ষেতে মধু উৎপাদনে পরাগায়ন বাড়ায় সরিষার ফলনও ১০ ভাগ বৃদ্ধি পায়।

গুরুদাসপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানিয়েছে, মৌসুম শেষে ৬৮০টি বাক্স থেকে প্রায় ৬ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

চলনবিলে বিভিন্ন অঞ্চলের মৌচাষিরা মধু সংগ্রহে আশাবাদী। সাতক্ষীরার মৌচাষি আব্দুল মজিদ জানান, ১৩০টি বাক্স থেকে প্রতি দুই সপ্তাহে ৭-৮ মণ মধু সংগ্রহ করছি। প্রতি কেজি মধু ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সিংড়া উপজেলার মৌচাষি নাসির আলী বলেন, ১৮০টি বাক্স থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০০ কেজি মধু উৎপাদন হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা।

মৌচাষি সাগর ও আলমগীর জানান, গত কয়েক বছর ধরে মধু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তারা আশা করছেন, এই মৌসুমে ২-৩ লাখ টাকার মধু বিক্রি করতে পারবেন।

কৃষি বিভাগের সহায়তায় মৌচাষিরা মধু চাষে আরও দক্ষ হয়ে উঠছেন। তাড়াশ উপজেলা কৃষি বিভাগ পাঁচজন মৌচাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আধুনিক বাক্স সরবরাহ করেছে। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

সরিষা চাষ ও মধু উৎপাদনের এ সমন্বিত উদ্যোগ চলনবিলের কৃষি ও অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।