ছবি : পুকুরের পাড় ভেঙে যাচ্ছে
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় নির্বিচারে পুকুর খনন করে সরকারি পাকা রাস্তা পাড় হিসেবে ব্যবহার করার কারণে রাস্তা ধসে জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়দের ক্ষোভ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্য অনুযায়ী, তাড়াশ উপজেলার মোট রাস্তার পরিমাণ ৬৮০ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা রাস্তা ২৩৯ কিলোমিটার হলেও অনেক জায়গায় রাস্তার পাশে খনন করা পুকুরের পাড় ধসে গিয়ে পাকা রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। বিশেষ করে তাড়াশ-কাউরাইল, খুঁটিগাছা-নওগাঁ বাজার, তাড়াশ-বারুহাস, ও বিনোদপুর-বস্তুল রাস্তায় ব্যাপক ভাঙনের চিত্র দেখা গেছে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল হোসেন ও আমিরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা পাকা হয়, কিন্তু তা পুকুরে ধসে যায়। জনগণের কষ্টের কোনো কমতি হয় না। পুকুর মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এই সমস্যা চলতেই থাকবে।
পুকুরের কারণে সৃষ্ট এই সমস্যা রোধে এলজিইডি নতুন পরিকল্পনায় রাস্তা রক্ষায় গাইড ওয়াল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে। এতে সরকারের অতিরিক্ত ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। অথচ পুকুর মালিকদের বেআইনি কার্যক্রম বন্ধ করলে এই খরচ এড়ানো যেত।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, এলাকার জনগণ সচেতন না হলে সমস্যার সমাধান কঠিন। আমরা টেকসই রাস্তা নির্মাণে বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়টি যাচাই করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা জানান, মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বেশ কিছু পুকুর মালিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও দণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ বন্ধে প্রশাসন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
সরকারি সম্পদের সুরক্ষায় যথাযথ উদ্যোগ ও স্থানীয়দের সচেতনতার অভাবের কারণে তাড়াশে এই সমস্যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব জনজীবন ও অর্থনীতিতে পড়তে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
মতামত