ছবি : নওগাঁ মাজারের বারান্দার পাকা শানের মেঝেতে ১০ থেকে ১৫ জন ছিন্নমূল মানুষ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় তীব্র শীতের প্রকোপে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সরকারি শীতবস্ত্র বিতরণ এখনো শুরু না হওয়ায় তারা কনকনে ঠান্ডায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ মাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাজারের বারান্দায় শুয়ে থাকা ১০ থেকে ১৫ জন ছিন্নমূল মানুষ শীত নিবারণের জন্য পাতলা চাদর ও পুরনো কাঁথা জড়িয়ে শুয়ে আছেন।
৬০ বছরের বৃদ্ধা রজিনা খাতুন বলেন, খুব শিত্তি লাগোছে, মোক শিত্তির কাপড় দেও বা। গরম কাপড় পেলে এ্যানা আরাম মতো ঘুম পারমু। রজিনা মাজারের বারান্দায় রাত কাটালেও দিনের বেলা বিভিন্ন গ্রামে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
শীতবস্ত্রের অভাবে একই অবস্থায় দিন কাটছে নওগাঁ মাজারে আশ্রিত রূপালী ভানু ও শাহিন আলমের মতো আরও অনেকের।
রূপালী ভানু বলেন, সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে এই বারান্দায় থাকি। ঠান্ডার কারণে ভালো করে ঘুম হয় না।
ভ্যানচালক শাহিন আলম বলেন, জীবিকার তাগিদে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় নামি, কিন্তু শীতের কাপড় কিনতে পারি না।
তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাস শীতের প্রকোপ বাড়িয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে গরম কাপড় কেনার সামর্থ্যও তাদের নেই।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শামীম আহমেদ বলেন, শীতবস্ত্রের চাহিদা অনেক আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এখনো হাতে আসেনি। আশা করছি দ্রুতই বিতরণ শুরু হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা জানান, এ বছর আগেভাগেই শীত পড়েছে। আমরা শীতবস্ত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিতরণ করব।
ছিন্নমূল মানুষের শীতের কষ্ট লাঘবে সরকারি উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি স্থানীয় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।
মতামত