আজ ময়মনসিংহ হানাদার মুক্ত দিবস, যা ময়মনসিংহের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের এক অবিস্মরণীয় দিন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। দিবসটি নানা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে উদযাপিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে আজ ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য র্যালি এবং আলোচনা সভার মাধ্যমে ময়মনসিংহবাসী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি পুনরায় স্মরণ করেছেন।
সকালে নগরীর ছোট বাজারের মুক্তমঞ্চে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মুক্তিযোদ্ধারা জড়ো হন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয় বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে, এবং জাতীয় সংগীতের তালে তালে পতাকা উত্তোলন করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ ও জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
অনুষ্ঠান শেষে মুক্তমঞ্চ থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি র্যালি নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন। ছোট বাজার থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সূর্য সন্তানদের প্রতি আমাদের লাল সালাম। আপনারা আমাদের গর্ব, আমাদের চেতনার উৎস। আপনারা যে অনেক কষ্ট ও দুঃখ সহ্য করেছেন, তা জাতির কাছে অমূল্য। আপনারা এই দেশ স্বাধীন করেছেন, আমাদের ঋণ কোনোভাবেই শোধ সম্ভব নয়। তবে, জাতি আপনাদের সম্মান অটুট রাখবে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে আমি মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থাকার অনুরোধ করছি এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও বীরত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত করতে হবে, যেন তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়।
আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ এবং ময়মনসিংহের মুক্তির গল্প তুলে ধরা হয়। প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগিয়ে তোলেন।
এ দিনটি স্মরণে আগামী বছরগুলোতেও ময়মনসিংহবাসী আরও বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।
মতামত