বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনে বিপদাপন্ন দেশ হিসেবে পরিচিত। ক্রমাগত ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশটির জনগণের জীবন ও জীবিকায় গভীর প্রভাব ফেলছে। প্রতিবছর দেশের এক চতুর্থাংশ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়, আর বড় ঘূর্ণিঝড় গড়ে প্রতি তিন বছরে একবার আঘাত হানে, যা স্থানচ্যুতি বাড়িয়ে তোলে।
বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রভাবিত কিছু প্রধান ক্ষেত্র:
ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রা বৃদ্ধি: বাতাসের তীব্রতা এবং জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা দিন দিন বাড়ছে।
বৃষ্টিপাতের তারতম্য: এর ফলে বন্যা ও নদীভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে, যা বাড়ি, সম্পত্তি ও কৃষি ভূমির ক্ষতি করছে।
সমুদ্রস্ফীতি: উপকূলীয় অঞ্চলগুলো তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি লবণাক্ত পানির সমস্যা বাড়ছে।
খরা: উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত খরার কারণ হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকলেও স্থানচ্যুত মানুষের জন্য কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ নেই। বিশেষ করে, জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষের অধিকার সুরক্ষায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় করণীয়:
১. মনিটরিং প্রক্রিয়া: সারা দেশের জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে।
২. আইন ও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্তি: জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আইনে স্থানচ্যুত মানুষের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. খাস জমির বন্দোবস্ত: স্থানচ্যুত মানুষদের জন্য স্বচ্ছ ও কার্যকর প্রক্রিয়ায় খাস জমি বরাদ্দ দিতে হবে।
৪. অকৃষি জমি বরাদ্দ: অকৃষি জমি জলবায়ু স্থানচ্যুত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনে ব্যবহার করতে হবে।
৫. পুনর্বাসন কর্মসূচি: স্থানান্তর ও পুনর্বাসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
পরিবেশ আন্দোলন কর্মী মুজিব উল্লাহ তুষারের মতে, জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই এই সংকটের টেকসই সমাধান সম্ভব। এটি নিশ্চিত করতে হলে সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।
মতামত