ছবি :
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় প্রণোদনার আওতায় বিতরণ করা পেয়াঁজ বীজ চাষিদের জন্য হতাশা বয়ে এনেছে। সরকারি বীজ দিয়ে চাষ করা জমিতে অঙ্কুরোদগম হার অত্যন্ত কম হওয়ায় কৃষকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষকরা বলছেন, বীজের অঙ্কুরোদগম হার শূন্য থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যা চাষিদের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি রবি মৌসুমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ১,৪৫০ জন কৃষককে বারি পেয়াঁজ-৪ এবং তাহেরপুরী জাতের এক কেজি বীজ বিতরণ করা হয়। তবে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, তাদের জমিতে বীজ গজানোর হার একেবারে শূন্য শতাংশ পর্যন্ত নেমে এসেছে। কৃষি অফিস সরেজমিনে ১০-১২ শতাংশ অঙ্কুরোদগমের কথা বললেও, এই হারও সন্তোষজনক নয় বলে স্বীকার করেছে।
সালথার চাষি আরজু মিয়া, রমজান হাওলাদার, কবির কাজী ও শরিফুল হাসানের মতো প্রান্তিক কৃষকরা বলেন, আমাদের জমিতে বীজ গজায়নি, অথচ আমরা এসব পেয়াঁজ বীজের ওপর নির্ভরশীল। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি প্রণোদনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। এখন আমাদের কী হবে বুঝতে পারছি না। ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন সিকদার জানিয়েছেন, বিএডিসি সরবরাহকৃত বীজগুলো বিতরণ করা হয়েছিল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং জেলা কৃষি পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কমিটি একটি তদন্ত দল গঠন করেছে। তবে কৃষকদের ক্ষতির দায়ভার নিতে কেউ প্রস্তুত নয়।
সালথা উপজেলা পেয়াঁজ উৎপাদনে দেশের প্রথম সারিতে রয়েছে। প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন পেয়াঁজ উৎপাদন হয়। এ বছর সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে পেয়াঁজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে প্রণোদনার বীজে এমন ব্যর্থতার কারণে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রণোদনার বীজ অঙ্কুরোদগমে ব্যর্থ হওয়ায় চাষিদের অনেকেই বাজার থেকে নতুন বীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে বীজের উচ্চমূল্য এবং বপনের সময় শেষ হওয়ায় অধিকাংশ চাষি চরম হতাশায় ভুগছেন।
সরকারি বীজের গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দ্রুত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হলে, তারা পরবর্তী মৌসুমে পুনরায় চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মতামত