সারাদেশ

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে পিড়িতে বসে চুল কাঁটার ঐতিহ্য

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে পিড়িতে বসে চুল কাঁটার ঐতিহ্য

ছবি : মুন টাইমস নিউজ


প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর ২০২৪, সন্ধ্যা ৮:৫৯

মানুষ স্বভাবগতভাবে সৌন্দর্যের পূজারী, আর এই সৌন্দর্যের অন্যতম উপকরণ হলো চুল ও দাড়ি। যুগ যুগ ধরে পুরুষদের সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বকে শানিত করার ক্ষেত্রে চুল ও দাড়ির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সেই সৌন্দর্য বজায় রাখতে নরসুন্দরদের (নাপিতদের) ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে কালের বিবর্তনে পিড়িতে বা খাটিয়ায় বসে চুল কাটার ঐতিহ্য আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। একসময় হাট-বাজার এবং গ্রাম-গঞ্জের পথঘাটে নরসুন্দরদের হাঁটুর নিচে মাথা পেতে চুল-দাড়ি কাটানোর দৃশ্য ছিল আবহমান বাংলার চিরচেনা রীতি। কিন্তু আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় এখন সেই চিরচেনা দৃশ্য তেমন দেখা যায় না। আধুনিক সেলুন ও জেন্টস পার্লারের প্রসার ঘটায় পুরনো পদ্ধতিতে চুল কাটার রীতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এখনও স্বল্প আয়ের মানুষ নরসুন্দরদের কাছে চুল ও দাড়ি কাটান। নরসুন্দর রতন কুমার জানান, তিনি ৪০-৪৫ বছর ধরে এই পেশায় আছেন এবং সপ্তাহে ৫ দিন নওগাঁ বাজারে বসে এবং ২ দিন ভ্রাম্যমাণভাবে কাজ করেন। তিনি আরও জানান, ১৫-২০ বছর আগে চুল ও দাড়ি কাটার মূল্য ছিল মাত্র ৪-৫ টাকা, যা দিয়ে সংসার ভালোভাবেই চলতো। কিন্তু এখন চুল কাটাতে ২৫-৩০ টাকা এবং দাঁড়ি কাটাতে ১৫-২০ টাকা নেওয়া হলেও, গ্রাহক পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাহক সালাম হোসেন, জাহিদ আলী, সোহাগ হোসেনসহ অনেকেই জানান, আধুনিক সেলুনের উচ্চ খরচের কারণে তারা এখনও পিড়িতে বসে চুল কাটতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ প্রসঙ্গে নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনু জানান, সময়ের বিবর্তনে পিড়িতে বসে চুল কাটার দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। তবে একসময় এই ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে গল্পের মতো মনে হবে।