জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বনজ গাছের নিচে অব্যবহৃত জমিতে বস্তা পদ্ধতিতে এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ শুরু হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই উদ্যোগ নিয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম।
তিনি জানান, আমদানি নির্ভর কৃষিপণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে তাঁর আগ্রহ সব সময় ছিল। প্রতিবছর দেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়, বিশেষ করে আদা আমদানির কারণে। তাই দেশের বাজারে স্বল্প মূল্যে আদা পাওয়ার জন্য বস্তা পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বর্ষাকালে আদা চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তবে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ ঝুঁকিমুক্ত। অতিবৃষ্টি বা খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে বস্তাগুলো সহজেই অন্যত্র সরানো যায়, ফলে আদা গাছ সুরক্ষিত থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলায় বারি আদা ১, বারি আদা ২ এবং পাহাড়ী জাতের প্রায় ৮ হাজার বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে।
উদ্যোক্তা তছলিম উদ্দীন জানান, তিনি এক হাজার পাঁচশত বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন এবং প্রত্যেকটি বস্তায় ৪০-৫০ টাকা করে খরচ হয়েছে। তার আশা, প্রতি বস্তায় ২ কেজি আদার ফলন হলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুন্ডুরিয়া, রুকিন্দীপুর, রামশালা, জাফরপুর ও তিলকপুর এলাকায় বস্তায় তরতাজা আদাগাছগুলো সতেজ অবস্থায় রয়েছে এবং কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শে আদা গাছ পরিচর্যায় নারী ও পুরুষেরা ব্যস্ত রয়েছেন।
নতুন কৃষি উদ্যোক্তা সিরাজুল জানান, তিনি এবার পরীক্ষামূলকভাবে দুই শতক জমিতে আদা রোপন করেছেন এবং ভবিষ্যতে বস্তা পদ্ধতিতে চাষ করার পরিকল্পনা করছেন।
কাশিড়া গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন ৫০ শতাংশ পতিত জমিতে দেশি জাতের ৩০০০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। বর্তমানে আদার কেজি ২৫০ টাকা, উত্তোলনের সময় বাজার মূল্য ২০০ টাকা হলে কয়েক লক্ষ টাকার লাভ হবে।
আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষের জন্য আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না এবং এ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে। এবছর উপজেলায় ৮ হাজার বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। বিদেশ থেকে আদা আমদানি কমাতে কৃষকদের এ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
মতামত