গীবত বা অন্যের পেছনে নিন্দা করা আজকাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। কুরআন ও হাদীসে গীবতের ভয়াবহতা বর্ণনা করা সত্ত্বেও আমরা এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে উদাসীন হয়ে পড়েছি। গীবত করা একটি মারাত্মক পাপ, যার ফলে ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তায়ালা গীবতের সাথে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার তুলনা করেছেন, যা অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ। কুরআনের সূরা হুজুরাতে এরশাদ করা হয়েছে, "তোমরা একে অপরের পেছনে নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো এটাকে ঘৃণ্যই মনে কর।" (সূরা হুজুরাত ৪৯:১২)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও গীবতের ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “মিরাজের রাতে আমি এমন এক দল লোককে দেখেছি, যারা নিজেদের চেহারা ও বক্ষ আঁচড়াচ্ছিল। তারা ছিল গীবতকারী, যারা মানুষের ইজ্জত নষ্ট করত।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৮৭৮)
গীবত কেবল দ্বীনী ক্ষতির কারণ নয়, এটি ব্যক্তিগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যার কাছে আপনি অন্যের সমালোচনা করছেন, সে হয়তো মনোযোগ দিয়ে শুনবে, কিন্তু পরবর্তীতে আপনার উপর আস্থা হারাবে এবং আপনাকে একজন বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে ভাববে না। ফলে আপনার সামাজিক অবস্থান ও প্রভাব-প্রতিপত্তি হ্রাস পায়।
গীবতকারী অন্যের সমালোচনা করে আত্মতৃপ্তি লাভের চেষ্টা করে, কিন্তু এতে তার সম্মান ও মর্যাদা নষ্ট হয়। গীবত মানুষের মনোবৃত্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। অন্যের সমালোচনা করার প্রবণতা ব্যক্তি এবং সমাজ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। তাই গীবতের ভয়াবহতা থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং আল্লাহর কাছে তওবা করা আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মতামত